বেস ক্যাম্পে যখন শোনপাপড়ি কেটে তিনি জন্মদিন পালন করছেন তখন কেউ তাঁর এমন পরিণতি কল্পনা করেননি। মা জয়শ্রীদেবী বাড়িতে ছেলের দীর্ঘায়ু কামনায় পায়েস আর পাঁচ রকম ভাজা দেবতাকে উৎসর্গ করেছেন। উৎকণ্ঠায় ছিলেন তিনি। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তাঁর পাহাড়-পাগল ছেলে পর্বতারোহীদের সঙ্গে চলে গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত মায়ের যাবতীয় আশঙ্কা সত্যি করে সোমবার বাড়ি ফিরে এল একমাত্র ছেলের মৃতদেহ।
পাড়ায়, বন্ধু মহলে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন বিশ্বরূপ সাহা ওরফে সাহেব। একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটর ছিলেন। সেই সঙ্গে ছিলেন রেশন ডিলার। বছর পাঁচেক আগে বাল্যবন্ধু সাজাহান মোল্লার হাত ধরেই পাহাড়ে চড়া। নেশায় পড়ে গেলেন পাহাড়ের। পাঁচ বছর ধরে তিনি ট্রেকিং-এ যাচ্ছেন। সান্দাকফু ট্রেক করে এসেছেন। এই বছরই মে মাসে ট্রেক করে এসেছেন সিমলা। তার পর পরিকল্পনা হয়েছিল চন্দ্রভাগা-১৩ শৃঙ্গ অভিযানের। মা আর স্ত্রী বারবার যেতে বারণ করেছিলেন। তিনি শোনেননি।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ছিল সাহেবের জন্মদিন। তার আগের দিনই কৃষ্ণনগরের ‘নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এর ১৩ জন সদস্য পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রায় সাড়ে চোদ্দো হাজার ফুট উচুঁতে বেস ক্যাম্পে। ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে তাঁদের মধ্যে সাজাহান মোল্লা, রীতেশ সাহা ও সৌরভ সিকদার বেরিয়ে পড়েন চন্দ্রভাগা-১৩ র উদ্দেশে। সাহেবের শরীরে সমস্যা হচ্ছিল বলে বাকিরা তাঁকে নিয়ে নীচে নেমে আসার সিদ্ধান্ত নেন। সঙ্গীরাই জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ শনপাপড়ি কেটে তাঁর জন্মদিন পালন করার পর সকলে নীচে নামতে থাকেন।