Advertisement
E-Paper

‘সত্যরূপের শীর্ষজয় বুক ভরিয়ে দেয়’

অসম্ভব এনার্জেটিক-প্রাণোচ্ছল একটা ছেলে। সব সময় যেন চনমন করছে। চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও সে অন্যকে উৎসাহিত করে যাচ্ছে। গান-বাজনা করে যাচ্ছে।

দেবাশিস বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৪

সত্যরূপকে আমি আগে থেকেই চিনি। গত বছরই আমার নেতৃত্বে হাওড়ার মলয় মুখোপাধ্যায়, সোনারপুরের রুদ্রপ্রসাদ হালদার ও বারাসতের রমেশ রায়ের সঙ্গে সত্যরূপ সিদ্ধান্তও এভারেস্ট জয় করেছে। সেই সুবাদে ওকে প্রায় দু’মাস নানা পরিস্থিতিতে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়।

অসম্ভব এনার্জেটিক-প্রাণোচ্ছল একটা ছেলে। সব সময় যেন চনমন করছে। চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও সে অন্যকে উৎসাহিত করে যাচ্ছে। গান-বাজনা করে যাচ্ছে। আমরা সে বার এভারেস্ট অভিযান খুবই উপভোগ করেছিলাম ওর জন্য। শুধু তাই নয় অসম্ভব ভাল মনের একটা ছেলে। যেটা পর্বত অভিযাত্রীদের ক্ষেত্রে ভীষণ প্রয়োজন। সেই সময়ে এভারেস্টের অভিযানের মধ্যেই এক দিন সত্যরূপের জন্মদিন পড়ল। সকলে মিলে খুবই হৈচৈ হল। বানানো হল কেক। তৈরি হল বিশেষ মেনু।

সত্যরূপের মনটা এতটাই বড় যে শুধু নিজের টিমের সদস্যদেরই নয়, অন্য টিমের সদস্যদেরকেও ও নানান ভাবে উতসাহিত করত। এমনই একটা ঘটনা ঘটেছিল বেঙ্গালুরুর মেয়ে নন্দিতার সঙ্গে। ক্যাম্প ওয়ানে গিয়ে মেয়েটার পক্ষে আরও উপরে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে। নানান কারণে সে উপরে উঠতে সক্ষম ছিল না। ফিরে যাবে বলছিল। খবরটা এসে পৌঁছল আমাদের দলের কানেও। এক দিন হঠাৎ সত্যরূপ বলল যে ওদের ক্যাম্পে গিয়ে মেয়েটাকে উৎসাহিত করতে চায়। আমরা একটু ইতস্তত করছি। কারণ পাহাড়ের অভিযানে সাধারণত এমনটা হয় না। নানান কারণে এজেন্সিগুলো একটু দূরত্ব রাখতে চায় দুই দল অভিযাত্রীদের মধ্যে। সত্যরূপ সে সবের ধার ধারে না। সটান ওদের ক্যাম্পে গিয়ে নন্দিতার খোঁজ করে। জানা যায় নন্দিতা প্রাকটিস করতে গিয়েছে। ওই বরফের মধ্যে খুঁজতে খুঁজতে আমাদের নিয়ে চলল নন্দিতার কাছে। কথা হল নানান রকম। রাতে আমাদের ক্যাম্পে ডিনারের জন্য নিমন্ত্রণ করা হল নন্দিতাকে। রাতে সকলে মিলে ডিনার হল। প্রচুর মজা হল। এরপর নন্দিতাও আসত আমাদের ক্যাম্পে। মেয়েটা তখনকার মতো মনের জোর পেল। পরে ক্যাম্প টু থেকে ফিরে আসে। কিন্তু নন্দিতার সঙ্গে সত্যরূপের যোগাযোগ রয়ে গিয়েছে। ওরা একটা টিমও তৈরি করেছে। বড় বড় পর্বত শৃঙ্গ জয় করতে গেলে বড় মনের মানুষ হওয়া প্রয়োজন। যেটা সত্যরূপের আছে। প্রথম থেকেই ওর লক্ষ ছিল সপ্তশৃঙ্গ জয় করার। সেটা যে ও পারবে আমাদের বিশ্বাস ছিল। মনের দিক দিয়েও ও তার যোগ্য। সব চাইতে বড় কথা ভিনসন ম্যাসিফ জয় করতে বিরাট অর্থের প্রয়োজন। প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। শৃঙ্গ জয় করার থেকে এই অর্থ জয় করা আরও অনেকটাই কঠিন। আমাদের গর্ব যে সত্যরূপ শেষ পর্যন্ত সপ্তশৃঙ্গ জয় করল।

প্রতিবেদক অসামরিক ক্ষেত্রে প্রথম এভারেস্ট জয়ী বাঙালী।

Debasish Biswas Satyarup Siddhanta Mountaineer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy