অ্যাসিড হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। দগ্ধ মুখ নিয়ে ওঁরাও জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘আবার কবে সতর্ক হবে প্রশাসন?’’
নদিয়া কিংবা পড়শি, মুর্শিদাবাদে একের পর এক অম্লরোষ আছড়ে পড়েছে উনিশ থেকে উনচল্লিশের মুখে। প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসনেরও কি মুখ পুড়ছে না? কেন বার বার অ্যাসিড টেস্টে ফেল করছে প্রশাসন?
ঘটনার পরে কিছু দিন হইচই, দু’একজন গ্রেফতার— পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতা বলতে এইটুকুই! তারপর ফের যে কে সেই! জেলায় কত জনের অ্যাসিড বিক্রির লাইসেন্স আছে, সেই তথ্যও প্রশাসনের কাছে ছিল না।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অ্যাসিড হামলার পরে নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। ঠিক হয়েছিল, আবেদনপত্র চেয়ে অ্যাসিড বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। নদিয়ায় এখনও পর্যন্ত লাইসেন্সের জন্য আবেদনপত্র জমা পড়েছে ১১৮টি। ইতিমধ্যে ৭৫ জনকে লাইসেন্স দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “লাইসেন্স ছাড়া কেউ অ্যাসিড বিক্রি ও মজুত করলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা প্রশাসনের দাবি, লাইসেন্স দেওয়ার ফলে অ্যাসিড হামলা অনেকটাই কমে যাবে। গোটা বিষয়টি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে ও নজরে থাকবে। যা শুনে অ্যাসিড আক্রান্ত এক তরুণী বলছেন, ‘‘প্রশাসনের ঘুম ভাঙল ঠিকই। তবে বড্ড দেরি হয়ে গেল। আগেই যদি ওরা সতর্ক হতো!’’
২০১৩ সালের জুলাই মাসে একটি মামলার শুনানির সময় শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, যাঁদের অ্যাসিড বা ওই ধরনের বিপজ্জনক দ্রব্য বিক্রির অনুমোদন রয়েছে, তাঁদের কাছে একটি রেজিস্টার থাকবে। সেখানে ক্রেতার ঠিকানা লিখে রাখতে হবে। সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ অ্যাসিড কিনতে পারবেন না। তাঁর কাছে কত অ্যাসিড রয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখতে হবে বিক্রেতাকে। কেউ যদি অ্যাসিডের পরিমাণ না জানান, তা বাজেয়াপ্ত করে বিক্রেতার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। বাধ্যতামূলক নজরদারিও চালানো হবে অ্যাসিড ব্যবহারকারীদের উপরেও।
অথচ অভিযোগ, বাস্তবে বিষয়টি নিয়ে হেলদোল ছিল না কারও। ব্যবসায়ীরা অবাক হয়ে জানিয়েছেন, অ্যাসিড বিক্রির জন্য আবার লাইসেন্স লাগবে নাকি? প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যাঁরা ব্যবসা করবেন তাঁরাই তো লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করবেন। অবশেষে টানাপড়েন কাটিয়ে নদিয়ায় সেই লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল।
আর মুর্শিদাবাদে?
অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শ্যামলকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে অ্যাসিড বিক্রি করতে চেয়ে কোনও আবেদনপত্র জমা পড়েনি। তবে খুব শিগ্গির সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে আবেদনপত্র চাওয়া হবে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে লাইসেন্স দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy