E-Paper

বেআইনি জলের সংযোগ, নামল পুলিশও

নির্দেশ পেয়ে জলের পাইপ লাইন থেকে অবৈধ ভাবে জল নেওয়ার অভিযোগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নওদার ইদ্রাকপুরের জেম খানদের বাড়িতে বছর দুয়েক আগে নলবাহিত জলের পাইপ পৌঁছিয়েছে। কিন্তু গত দু’বছরেও সেই পাইপ দিয়ে এক ফোঁটা জল পৌঁছয়নি।

আবার হরিহরপাড়ার দস্তুরপাড়ার আব্দুল আলিমদের বাড়িতেও দু’বছর ধরে জলের পাইপলাইন পৌঁছিয়েছে। কিন্তু তাঁদের বাড়িতেও এক ফোঁটা জল পৌঁছয়নি।

অভিযোগ, জেম খান, আব্দুল আলিমদের মতো জেলা জুড়ে এমন অনেক বাড়িতে নলবাহিত জলের পাইপ পৌঁছলে সেই পাইপ দিয়ে জল পৌঁছয়নি। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলার বাসিন্দারা। সম্প্রতি নলবাহিত জলের (জল জীবন মিশনের) রাজ্যের এমন পরিস্থিতির কথা জেনে ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন জল পৌঁছয়নি সে সবের তদন্তের যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনই কারও গাফলতি থাকলেও তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

সেই নির্দেশ পেয়ে জলের পাইপ লাইন থেকে অবৈধ ভাবে জল নেওয়ার অভিযোগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তাদের দাবি, জেলায় বিভিন্ন থানায় এ রকম অবৈধ ভাবে জল নেওয়ার জন্য ৭০০টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ যাতে এফআইআর করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সে কথা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশও বাড়ি বাড়ি গিয়ে অবৈধ জলের সংযোগ কেটে দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। তার পরেও অবৈধ জলের সংযোগ না কাটলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। মঙ্গলবারই বহরমপুর থানার পুলিশও বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে যাঁরা জলের অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন, তাঁদের সেই সব সংযোগ কাটার নির্দেশ দিয়েছে।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর তাঁদের কাছে অবৈধ জলের সংযোগের বিষয়ে অভিযোগ করেছে। পুলিশ সরজমিনে তদন্ত করে পদক্ষেপ করছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মুর্শিদাবাদের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জীব সরকার বলেন, ‘‘জলের পাইপ লাইনে অবৈধ ভাবে মটোর বসিয়ে বাড়ির ছাদের ট্যাঙ্কে জল তুলে নিচ্ছে, অনেক জায়গায় অতিরিক্ত ট্যাপকল লাগিয়ে অতিরিক্ত জল নিচ্ছে। যার জেরে পাইপলাইনে জলের গতি কমে জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। তাই অবৈধ জলের সংযোগের বিরুদ্ধে‌ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানায় প্রায় ৭০০টি অভিযোগ করা হয়েছে। সেগুলি এফআইআর করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা পুলিশকে বলা হয়েছে।’’

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় জল জীবন মিশনে ১৬ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮৮২টি পরিবারে জলের পাইপলাইন ও ট্যাপকল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬০ টি বাড়িতে জলের পাইপলাইন ও ট্যাপকল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪০.৩০ শতাংশ বাড়িতে জলের পাইপলাইন ও ট্যাপকল পৌঁছিয়েছে। তবে বহু বাড়িতে পাইপলাইন এবং ট্যাপকল গেলেও জল পৌঁছয়নি। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁরা জানাচ্ছেন, নামকেওয়াস্তে কাজ করা হচ্ছে। জলের পাইপলাইন এবং ট্যাপকল বসানোর কাজও নিম্নমানের। যদি জল না পৌঁছয় তবে জলের পাইপলাইন বসিয়ে লাভ কী?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Water Pipeline Berhampore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy