Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কার সন্তান জানতে ডিএনএ পরীক্ষা

কিন্তু মুখের কথায় আইন চলে না। শুভজিৎ ওরফে শামিমের তাই ঠাঁই হয়েছে করিমপুরের হোমে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময়েও বিজলিকে আঁকড়ে ধরে খুব কান্নাকাটি করেছিল সে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর ও করিমপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ১০:২০
Share: Save:

নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলেন দুই ‘মা’ই। শেষ পর্যন্ত তাই ঝুলে থাকল চাপড়ার ভাতজাংলা থেকে করিমপুরের হোমে নিয়ে যাওয়া শিশুর ভাগ্য। বাধ্য হয়ে আদালতের কাছে শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানানোর সিন্ধান্ত নিল পুলিশ। যতদিন না সেই পরীক্ষা হয়ে রিপোর্ট এসে পৌঁছচ্ছে, তত দিন হোমেই থাকতে হবে শিশুটিকে।

বুধবারও হোমে গিয়ে দেখা যায়, চার বছরের ছেলেটি মোটেও ধাতস্থ হয়নি। অন্য ছেলেদের সঙ্গে খেলতে-খেলতেও সে কেঁদে উঠেছে মাঝে-মধ্যেই। খুঁজছে তার মাকে। যে মা জন্মদাত্রী নন, কিন্তু দু’বছর ধরে তাঁর আঁচলের গন্ধই সে চেনে।

ভাতজাংলায় বিজলি দাসের ঘরে দিব্যি মানুষ হচ্ছিল ছেলেটা। বাঙালঝি গ্রামের এক মুরগির কারবারি তাকে দেখে এসে ছেলে-হারানো পড়শি সরিফা বিবিকে বলেন, সে-ই তাঁর ছেলে শামিম শেখ। সরিফা ছুটে যান। পুলিশের জেরার মুখে বিজলি জানান, শুভজিৎ নামে ওই ছেলেটিকে তিনি দত্তক নিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বামনঘাটার ফুলি দাসের থেকে। পরে ফুলি চাপড়া থনায় এসে ছেলের বার্থ সার্টিফিকেট দেখিয়ে বলেন, বিজলির কথাই ঠিক।

কিন্তু মুখের কথায় আইন চলে না। শুভজিৎ ওরফে শামিমের তাই ঠাঁই হয়েছে করিমপুরের হোমে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময়েও বিজলিকে আঁকড়ে ধরে খুব কান্নাকাটি করেছিল সে। কেঁদে আকুল হয়েছিলেন বিজলি নিজেও। হোমের দাদারা প্রাণপণে চেষ্টা করছে তাকে ভুলিয়ে রাখতে। কোলে করে ঘুরছে, খেলা দিচ্ছে। কিন্তু তাতেও তাকে ভোলানো যাচ্ছে না। মঙ্গলবার রাতে ঘুমোতে গিয়ে মায়ের বায়না ধরেছিল সে। বুধবার দুপুরে খেতে গিয়ে অস্থির হয়েছে ‘বাবা’, বিজলির স্বামী সঞ্জিত দাসের জন্য। সরিফা ও ফুলি দু’জনেই এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড়। মঙ্গলবারই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে কথা বলেন চাপড়া থানার ওসি পার্থপ্রতিম রায়। সমাধানসূত্র না মেলায় ডিএনএ পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরিফা ও ফুলি দু’জনেই নিজেদের অবস্থানে অনড়। মঙ্গলবারই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে কথা বলা হবে। কথা বলা হবে বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE