চিকিৎসা চলছে নমিতা মণ্ডলের। নিজস্ব চিত্র।
জরায়ু ফেটে মৃত্যু হয়েছে সন্তানের। প্রসূতির পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক ছিল যে, প্রসূতিকে বাঁচানোই চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে। শেষ পর্যন্ত তিন সদস্যের মেডিক্যাল টিম তৈরি করে প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের অস্ত্রোপচারের পর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে মহিলার।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত বুধবার সকাল প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ নমিতা মণ্ডল নামে ওই প্রসূতিকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। স্থানান্তরের বিষয়টি রানাঘাট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আগেই জানিয়েছিল শান্তিপুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। সেই সময় অবশ্য প্রসূতির সমস্যা নিশ্চিত করা যায়নি। তবে মহিলার জরায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন সম্ভাবনার কথা ‘রেফার কার্ড’-এ উল্লেখ করা হয়েছিল।
বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি চিকিৎসক অপূর্ব কুণ্ডু বলেন, ‘‘মহিলা আমাদের হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে তাঁর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে থাকে। বুঝতে পারি পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে আগে থেকেই হাসপাতাল সুপারের নেতৃত্বে আমাদের মেডিক্যাল টিম তৈরি হয়েছিল। সেই মতো আমরা আলট্রাসনোগ্রাফি করার পরেই ওই মহিলার অস্ত্রোপচার করি। তার জরায়ু ফেটে পেটের ভেতরেই সন্তান বেরিয়ে আসে। যদিও সেই সদ্যোজাতকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।’’ চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতায় এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম।’’
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রসূতিকে অন্য বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করাটাও কার্যত ঝুঁকিপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত আমরা সন্তান বাঁচাতে না পারলেও মাকে বাঁচাতে পেরেছি।’’
প্রস্তুতির দিদি মমতা ঘোষ বলেন, ‘‘বোন দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল। শান্তিপুর হাসপাতালেই ওকে প্রথমে ভর্তি করি। কিন্তু ওর শারীরিক সমস্যা কী হয়েছিল, তা কিছুই জানতাম না। সেখান থেকে রানাঘাটে স্থানান্তর করা হয়। এই হাসপাতালের জন্যই বোনের এ যাত্রায় প্রাণ বাঁচল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy