জয়ী: ফল ঘোষণার পরে সৌমিক হোসেন। ডোমকলে। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের রোদ্দুর যখন ডোমকলের আকাশে গন গন করছে, সতর্ক বার্তাটা এসেছিল তখনই— ‘দেখ বাপু, বিরোধীশূন্য করে মুখ পুড়িও না!’
ফল বেরোতে তাই দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে রেখেও ডোমকলের তাবড় নেতা বলেছিলেন, ‘‘যাক, কথা রাখতে পেরেছি তা হলে!’’
ছবিটা বদলে যেতে দেখা গেল বিকেলেই। ফল বেরোনের পরেই ঘন সবুজ আবীরে জৈষ্ঠ্য আকাশ ছেয়ে যেতেই বামেদের এক মাত্র জয়ী প্রার্থী ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম মুচকি হেসে সেই সবুজে হারিয়ে গেলেন। তাঁর ওয়ার্ডেই আমিনাবাদে ইভিএম ভাঙায় দু’টি বুথে মঙ্গলবার ফের ভোট হয়েছিল। দু’টিতেই এগিয়ে থেকেছেন বামপ্রার্থী রফিকুল। কিন্তু তাতে তাঁর জার্সিবদল আটকায়নি।
রফিকুলের দেখাদেখি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী আসরাফুল ইসলামও হেঁটে গিয়ে সবুজে সবুজ হয়ে হেসে ফেললেন— তার মানে আপনারা তৃণমূলে? হেসে দু’জনেই জানালেন, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থে!’’
তা হলে কি সেই শুভেন্দু মডেলই সিলমোহর পেল দলের।?
মাস কয়েক আগে, তখনও ভোটের দামামা তেমন বাজেনি। ক্রমাগত দলবদলের আবহে শুভেন্দু জানিয়ে গিয়েছিলেন, এর পরে ভোটে যদি বিরোদীদের কেউ জেতেন তা হলে দিন কয়েক পরে তিনিও এসে হাত ধরবেন আমাদের, ‘জেনে রাখুন’। সেই জেনে রাখাটাই তা হল?
ডোমকলে রান পাতলে শোনা যাচ্ছে, আদতে ব্য়াপারটা ২১-০ হল। কারণ জয়ী দুই বাম-কংগ্রেস প্রার্থীর মতো ২১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী বিল্লাল হোসেনও তৃণমূলের পথেই পা বাড়িয়ে রয়েছেন। এবং সে কারনেই এ দিন দুপুর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ। তৃণমূলের এক নেতা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘‘ও তো আমাদের ডোরায় রয়েছে। পাছে দল ওকে চাপ দেয় তাই ফোনটা বন্ধ।’’
ছবিটা যে এমনই হবে, তা কী জেনে গিয়েছিলেন বিরোধীরা? না হলে, এ দিন সকাল থেকে সিপিএম-কংগ্রেসের দলীয় কার্য়ালয়গুলিতে দিনভর তালা ঝুলল কেন!
তবে, দল বদলের কথা শুনে চমকে উঠেছেন দলের নেতারা। এত দ্রুত? কংগ্রেস নেত্রী শাওনী সিংহ রায় বলছেন, ‘‘কী বলব বলুন তো, এটা তো প্রার্থী বেচাকেনার ভোট। একরটা দল এতটা নিচে নামতে পারে!’’
আর সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নারায়ণ দাসের কথায়, ‘‘আমরা গোটা ভোট প্রক্রিয়াটাকে অবৈধ মনে করি। ফলে কে গেল কে এল তাতে কিছু যায় আসে না। মানুষ এর বিচার করবেন!’’
কবে মিলবে শেষমেশ? এ কথার উত্তর অবশ্য মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy