শেষমুহূর্তের প্রস্তুতি ঢাকিদের। — ফাইল চিত্র।
দেবীপক্ষের শুরু। শুরু পুজোর দিন গোনা। পুজোর বরাত পেয়ে ওঁদের কেউ যাবেন সানফ্রান্সিসকো, কেউ যাবেন সিডনি। আবার কেউ বা রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে পা রাখবেন ভিন্রাজ্যে। মুর্শিদাবা্দের ঢাকিদের কদর দেশবিদেশে। সেই ঢাকিপাড়ায় এখন বাজছে আগমনীর বোল। তুঙ্গে শিল্পীদের প্রস্তুতি। কারণ দিন কয়েক বাদেই তাঁরা পাড়ি জমাবেন পুজো প্যান্ডেলের উদ্দেশে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার বাসিন্দা হারান রুইদাস পুজার কয়েকটা দিন কাটাবেন সানফ্রান্সিস্কোর একটি দুর্গাপুজোয়। কোভিডের কারণে গত কয়েক বছর তেমন সুযোগ হয়নি। তবে এ বার তিনি বরাত পেয়েছেন উল্টোরথের দিন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি পুজোয় ঢাক বাজাবেন মঙ্গল রুইদাস। সাত সাগরের পারে যেমন কেউ কেউ যাচ্ছেন, তেমনই বেলডাঙা অঞ্চলের অনেক শিল্পী যাচ্ছেন দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাত এবং দক্ষিণ ভারতেও। কান্দি থেকে অন্তত ২৫ জন ঢাকি এ বছর পুজোয় যাবেন ভিন্রাজ্যে। গত কয়েক দিন ধরে বেলডাঙার ঢাকিপাড়ায় পুজোর বাজনার প্রস্তুতিই চলছে পুরোদমে। পাশাপাশি রয়েছে বাদ্যযন্ত্র শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা করে নেওয়া এবং তার অঙ্গসজ্জার পর্বও।
কান্দি মহকুমা এলাকায় রয়েছেন প্রায় ১৬০০ ঢাকবাদ্য শিল্পী। যাঁদের মধ্যে সরকারি পরিচয়পত্র পেয়েছেন প্রায় ৮০০ জন। এ বছর ভরতপুর ১ নম্বর ব্লক থেকে আট জন, ভরতপুর ২ নম্বর ব্লক থেকে আট জন, বড়ঞা থেকে তিন জন এবং খড়গ্রাম ব্লক থেকে পাঁচ জন শিল্পী পুজোয় যাচ্ছেন ভিন্রাজ্যে ঢাক বাজাতে।
সর্বাঙ্গপুরের ঢাকি অমর দাস বলেন, ‘‘আমি ২৫ বছর ধরে চেন্নাইয়ের একটি বাঙালি পুজোয় ঢাক বাজিয়ে আসছি। করোনা পরিস্থিতিতে দু'বছর যেতে পারিনি। কিন্তু এ বছর আমার সঙ্গে গোটা দল যাচ্ছে।’’
সর্বাঙ্গপুরেরই সপ্তম দাস যাবেন দিল্লিতে। সঙ্গে যাবেন আরও তিন শিল্পী। সপ্তম বলেন, ‘‘এর আগে অন্তত ১৪ বছর কলকাতা, হাওড়ার পুজোয় আমরা ঢাক বাজিয়ে এসেছি। তবে এই প্রথম আমরা ভিন্রাজ্যে বাজাতে চলেছি। টিকিট হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয়ার দিন হাওড়া থেকে ট্রেন ধরব। বাড়ি ফিরব লক্ষ্মীপুজোর পর।’’
তবে ঢাকিদের আক্ষেপ, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়েনি তাঁদের মজুরি। তা সত্ত্বেও উৎসবের দিনগুলিতে পরিবার-পরিজন ফেলে কিছু পয়সা রোজগারের আশায় তাঁরা পাড়ি জমাচ্ছেন দূরদূরান্তে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy