Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাকে ধাক্কা মত্ত চালকের

বাড়ির লোকজন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ চত্বর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে শিশুটিকে নিয়ে এনআরএস হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে ধুবুলিয়ার হাঁসাডাঙা বিলের কাছে দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৭
Share: Save:

মায়ের সন্দেহ হয়েছিল, অ্যাম্বুল্যান্সের চালক মদে চুর হয়ে আছেন। কিন্তু গুরুতর আহত শিশুকে নিয়ে কলকাতায় পৌঁছতে তিনি তখন মরিয়া। মাঝরাতে আর পাবেনই বা কী? বাধ্য হয়েই ছেলেকে আঁকড়ে অ্যাম্বুল্যান্সে বসেছিলেন তিনি।

খানিক বাদে নদিয়ার ধুবুলিয়ায় ট্রাককে পাশ কাটাতে গিয়ে তার পিছনে ধাক্কা মারল অ্যাম্বুল্যান্স। চালক বেঁচে গিয়েছেন। বেঁচে গিয়েছেন মা-ছেলেও। কিন্তু মারা গিয়েছেন শিশুটির দাদু ও কাকা।

সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন লিয়াকত শেখ (৬০) ও সহিদুল শেখ (৪০)। মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার বাবলাবোনার বাসিন্দা। লিয়াকতের নাতি, পাঁচ বছরের রহিম শেখ সোমবার সকালে বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। সে সময়ে গ্রামেরই এক বাসিন্দা আলম শাহের মোটরবাইকের ধাক্কায় সে গুরুতর আহত হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রানিনগর হাসপাতালে। সেখান থেকে তাকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।

অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই রহিমকে কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। বাড়ির লোকজন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ চত্বর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে শিশুটিকে নিয়ে এনআরএস হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে ধুবুলিয়ার হাঁসাডাঙা বিলের কাছে দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় লিয়াকতের। বাকিদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মৃত্যু হয় সহিদুলের। আহত শিশু ও তার মাকে মঙ্গলবার দুপুরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে এনআরএস হাসপাতালে
পাঠানো হয়েছে।

শিশুর পরিবারের অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সের চালক অমিত দাস মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এ দিন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রহিমের মা রঞ্জিদা বিবি বলেন, “আমি কিছু সময় পরেই বুঝতে পারি, চালক মদ খেয়েছে। চালাতে চালাতে ভুলভাল কথা বলছিল। তবুও আমরা ছেলের জীবনের কথা ভেবে কিছু বলিনি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে চালক বমি করে। আমরা তা নিয়ে বলতে গেলে উনি আমাদের নেমে যেতে বলেন।” এর খানিক পরেই ট্রাকের পিছনে ধাক্কা।

নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “আমরাও জেনেছি, চালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন। সেই কারণেই পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মেরেছেন।”

খবর পেয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে যান বহরমপুরের পাবলিক অ্যাম্বুল্যান্স ইউনিয়নের কর্তা মৈনাক চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন বহরমপুরের বেশ কয়েক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালকও। গুরুতর জখম অবস্থায় চালক সেখানেই ভর্তি রয়েছেন। মৈনাক বলেন, “আমরা কিন্তু মদ খেয়ে গাড়ি চালানো কোনও দিনই বরদাস্ত করি না। ধরা পড়লে তিন মাস সাসপেন্ড করার নিয়ম আছে। কী করে এই ঘটনা ঘটল, বুঝতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Ambulance Dhubulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE