কার্নিভালের শোভাযাত্রায় উঠে এল জলঙ্গি বাঁচানোর আর্তি। নদী বাঁচাতে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন জানানো হল প্রশাসনের কাছে। নদী আন্দোলনে জড়িতদের মতে, জলঙ্গিকে বাঁচিয়ে রাখতে দীর্ঘ দিন ধরে যে আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে— কার্নিভালের শোভাযাত্রায় নদী বাঁচানোর আর্তি তারই সুফল। এবারের কার্নিভালে উঠে এসেছে সম্প্রীতির বার্তাও।
একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নদী আছে নদিয়া জেলায়। তার বেশির ভাগই মৃত, না হয় মৃতপ্রায়। জেলার এক প্রান্তে যেমন ইছামতী-চুর্ণী নদীকে রক্ষা করার লড়াই চলছে, আর এক প্রান্তে তেমনই জলঙ্গিকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই করছে বেশ কিছু সংগঠন।
তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এই নদী তীরের স্বরূপগঞ্জ থেকে শুরু করে করিমপুরে বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষ। তালিকায় এক দিকে যেমন শিক্ষক-পড়ুয়ারা আছেন, তেমনই আছেন কৃষক থেকে শুরু করে দরিদ্র মৎসজীবীরাও।
বাহাদুরপুর জলঙ্গি তীরের অন্যতম বড় একটি গ্রাম। সেই গ্রামেরই একটি পুজো কমিটি শনিবারের কার্নিভালের শোভাযাত্রায় জলঙ্গি নদীকে বাঁচিয়ে রাখার আবেদন করে। ধুবুলিয়া থানার বাহাদুরপুর বিশ্বাসপাড়া বারোয়ারির সম্পাদক সুধীর বিশ্বাসের কথায়, “আমাদের বাড়ি নদীর ধারেই। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, নদীটাকে একটু একটু করে বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। দেখতে পাচ্ছি মাটি মাফিয়ারা কী ভাবে নদীপাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।” তিনি জুড়ছেন, “একই ভাবে অঞ্জনা নদীকে মেরে ফেলতে দেখেছি। জলঙ্গি নদীরও একই হাল হলে শুধু পরিবেশ নয়, বহু পরিবার ধ্বংস হবে। সেটা হতে দেওয়া যাবে না।”
তাঁদের বার্তাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতেই কার্নিভালকে বেছেছেন পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। শনিবার নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছু পরে শুরু হয় কার্নিভাল। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে মঞ্চের সামনে রাস্তায় অনুষ্ঠানের পরে কার্নিভাল শুরু হয়।
ততক্ষণে কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে একে একে শোভাযাত্রা করে প্রতিমা নিয়ে হাজির পুজো কমিটিগুলি। সেখান থেকে সদর মোড়, ফোয়ারার মোড় হয়ে তারা পোস্ট অফিস মোড়ের মঞ্চে উপস্থিত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, সভাধিপতি, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসকদের সামনে নৃত্য পরিবেশন করে আবার নিজের এলাকায় ফিরে যায়।
এ দিন সেই শোভাযাত্রাতেই নদী নিয়ে সরব হয় বাহাদুরপুরের পুজো কমিটি। ট্যাবলোর মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তাও দেয় একাধিক পুজো কমিটি। বর্তমান সময়ের জন্য পরিবেশ রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বলেই এমন আয়োজন বলে জানান উদ্যোক্তারা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)