বাড়ি থেকে মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছিল। দেখাশোনা করে এক জনকে পছন্দও হয়। বিয়ের প্রাথমিক কথাবার্তা এগিয়েছিল। কিন্তু পরিবারের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি হননি কলেজপড়ুয়া তরুণী। তিনি বিয়ে করেছেন নিজের পছন্দের পুরুষকে। সেই খবর পাওয়ার পরে মেয়েকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করল পরিবার! শুধু তাই নয়, মেয়ে চলে যাওয়ার ১২ দিন পরে আচার মেনে ‘ঘটা’ করে জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ দিল তারা। শ্রাদ্ধশান্তির পর আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের ভোজ খাওয়ানোরও ব্যবস্থা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের খাটুরা উত্তরপাড়া এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই তরুণী কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। বাড়ির অমতে অন্য ধর্মাবলম্বী যুবককে বিয়ে করেছেন তিনি। তার পরেই মেয়ের শ্রাদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। এমন কাণ্ডে পড়শিদের অনেকে অবাক। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই কলেজছাত্রীর বাবা কর্মসূত্রে ইজ়রায়েলে থাকেন। বিদেশ-বিভুঁইয়ে বসে মেয়ের এমন সিদ্ধান্তে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন প্রৌঢ়। তাঁর মত নিয়েই নাকি বাড়ি থেকে মেয়ের সমস্ত স্মৃতি মুছে দেন পরিবারের অন্যান্য সদস্য। তরুণীর ছবি, পোশাক, বইপত্র এবং ব্যক্তিগত নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলা হয় শনিবার। তার পরে আত্মীয়দের ডেকে ঘোষণা করা হয়, তাঁদের মেয়ে আজ থেকে মৃত!
তরুণীর কাকা সোমনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগেও মেয়েকে এক বার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু ও আবার পালিয়ে যায়। এ বার আর ক্ষমা করতে পারলাম না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুরোহিত ডেকে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী, ওর ছবিতে মালা দিয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেছি। মেয়ে আমাদের ভালবাসা বোঝেনি। সম্মান করেনি। তাই আজ থেকে ও আমাদের মেয়ে নয়।”
আরও পড়ুন:
পরিবার জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে তরুণী বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার দিনই তাঁকে মৃত বলে মেনে নিয়েছে তার। শনিবার মেয়ের পালিয়ে যাওয়ার ১২ দিন পার হয়েছে। তাই তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ওই পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা নাপিত ডেকে মাথা মুড়িয়ে নেন। তার পর পুরোহিত ডেকে জীবিত মেয়ে শ্রাদ্ধ করেছেন। এমনকি, আত্মীয়দের খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করেছেন। তরুণীর মা বলেন, “মেয়ে আমাদের যে অপমান করেছে, তা সহ্য করতে পারিনি। এটাই আমাদের প্রতিবাদ।”