Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Rabi Farming

কনকনে ঠান্ডায় রবিচাষে প্রমাদ গুনছেন চাষিরা

কৃষি নির্ভর নদিয়ায় শীতের মরসুমে গম, ভুট্টা, মুসুরি, মটর, আলু, সরষে ইত্যাদি রবি ফসলের চাষ হচ্ছে। অতিরিক্ত শৈত্য প্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা।

কুয়াশায় ঢেকেছে পেঁয়াজকলি। শান্তিপুরে।

কুয়াশায় ঢেকেছে পেঁয়াজকলি। শান্তিপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

সুদেব দাস
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৫
Share: Save:

ঠান্ডা হাওয়ার দাপটে সপ্তাহের প্রথম দিনে কার্যত জবুথবু অবস্থা জেলার বাসিন্দাদের। সোমবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইংরেজি নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শৈত্য প্রবাহের জন্য জেলায় রবি ফসলে ক্ষতির আশঙ্কায় একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে কৃষি দফতর। ফসল বাঁচাতে জেলা জুড়ে ১৮টি ব্লকেই কৃষকদের সতর্ক করছেন ব্লক কৃষি আধিকারিকেরা। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় আগামী দু-একদিন শৈত্য প্রবাহের দাপট চলবে। সঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।

কৃষি নির্ভর নদিয়ায় শীতের মরসুমে গম, ভুট্টা, মুসুরি, মটর, আলু, সরষে ইত্যাদি রবি ফসলের চাষ হচ্ছে। অতিরিক্ত শৈত্য প্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। ধানের পাতা লালচে হয়ে যাচ্ছে। ব্যাঘাত ঘটছে গাছের বৃদ্ধিতে। সরষে চাষের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যায় শীতকালীন ভুট্টাচাষিরাও। বোরোর বীজতলায় জৈব সারের সঙ্গে সালফার গঠিত সার প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায় সালফার জমি গরম রাখতে সাহায্য করে। আবার বীজতলায় কেরোসিন মাখানো নারকেলের দড়ি দিয়ে গাছের আগা ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষি দফতর থেকে। কুয়াশার কারণে সন্ধ্যে থেকে সকল পর্যন্ত বীজতলায় প্লাস্টিকের মশারি টাঙাতেও বলা হচ্ছে। ডাল শস্য বা তৈল বীজ চাষের ক্ষেত্রেও চাষিদের বরোনের স্প্রে করার কথা বলা হচ্ছে। তবে সোমবার সকাল থেকে শৈত্যপ্রবাহের কারণে অনেক চাষিই কনকনে ঠান্ডায় জমিমুখো হননি। রানাঘাটের আনুলিয়ার বাসিন্দা সুজিত সরকার, পিন্টু বর্মনদের কথায়, ‘‘সকালে জমিতে গিয়ে বীজতলার জল বের করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এত ঠান্ডা যে সকালে জমিতে যেতে পারছি না। জানি না এবার চাষ কেমন হবে।"

শৈত্যপ্রবাহ থেকে রবিফসল বাঁচাতে চাষিদের কী কী বাড়তি সতর্কতা নেওয়া দরকার, কোন কোন সার প্রয়োগ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে একটি পরামর্শমূলক নির্দেশিকা রাজ্যস্তর থেকে জারি করা হয়েছে। তাতে কোন রোগের ক্ষেত্রে কোন ওষুধ, কী পরিমাণে কী ভাবে প্রয়োগ করতে হবে তাও উল্লেখ করা আছে। সেই মত প্রচারে চালাচ্ছে ব্লক কৃষি দফতর। জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) পারমিতা মিত্র বলেন, "প্রতিকারের চাইতে প্রতিষেধক ব্যবহার করার কথাই চাষিদের বলা হচ্ছে। গাছে রোগ ও অনুখাদ্যের অভাব হলে লক্ষণ প্রায় একই থাকে। তাই আক্রান্ত গাছ বা পাতার নমুনা নিয়ে চাষিদের ব্লক অফিসে আসতে বলা হচ্ছে।"

এদিন সকাল থেকে কনকনে ঠান্ডায় রাস্তার পাশে, মাঠের কোণে আগুন জ্বালিয়ে মানুষজনকে জড়ো হতে দেখা গিয়েছে। চায়ের দোকানেও ছিল থিকথিকে ভিড়। ঠান্ডার দাপটে সকাল ন’টা- দশটার আগে ঘর থেকে অনেকেই বেরোতে চাননি। অনেক বেলা পর্যন্ত এদিন সূর্যের দেখাও মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cold Weather
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE