শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাট থেকে কালনা ঘাটের দিকে যাচ্ছে ফেরি। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
সাত বছর আগে ভয়াবহ নৌকাডুবির স্মৃতি এখনও টাটকা অনেকের কাছে। অনেকে সে দিন হারিয়েছিলেন প্রিয়জনকে। শনিবার থেকে কালনায় ভবা পাগলার মেলা শুরু হতেই সেই বিষাদের স্মৃতি ফিরছে। তবে তা সত্ত্বেও লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই চলল পারাপার।
২০১৬ সালের ১৪ মে নদিয়া থেকে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় ভবা পাগলার মেলায় গিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। সেখান থেকে ফেরিতে ভাগীরথী পেরিয়ে শান্তিপুরে নৃসিংহপুর ঘাটে ফেরার সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। কালনা ঘাট থেকে ছাড়ার পরেই যাত্রী-বোঝাই নৌকা উল্টে যায়। নিখোঁজ হন বহু মানুষ। পরের দিন অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে নৃসিংহপুর ঘাট এলাকা। একাধিক নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জখম হন দুই পুলিশকর্মী।
এ বছরও সকাল থেকেই প্রচুর মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে। সে বারের দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে গত কয়েক বছর ধরেই নানা নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে। জেটির নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের গায়ে ওঠেনি লাইফ জ্যাকেট।
কালনার পুরপ্রধন আনন্দ দত্ত অবশ্য জানিয়েছেন, দু’শোরও বেশি লাইফ জ্যাকেট আনা হয়েছে ঘাটে। দুর্ঘটনা এড়াতে আরও নানা সরঞ্জাম রয়েছে। কালনা এবং নৃসিংহপুর ঘাটের মধ্যে চালানো হচ্ছে বিশেষ ভেসেল। যাত্রীরা যাতে লাইফ জ্যাকেট পরেন তার জন্য প্রচারও চালানো হচ্ছে। তবে রানাঘাটের কলাইঘাটা থেকে আসা বাসন্তী মণ্ডল, আঁইশতলার অনিমেষ দাসেরা বলছেন, “লঞ্চে ওঠার পর আমাদের কেউ লাইফ জ্যাকেট দেয়নি। তা পরতেও বলেনি। "
এ দিন সকালে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দু’টি লঞ্চ-জাতীয় জলযান চলাচল করছে। তার সঙ্গে রয়েছে একটি ভেসেলও। সাইকেল, মোটরবাইক এবং অন্যান্য গাড়ি ভেসেলে পারাপার করছে। ঘাটের ধারে রয়েছে পুলিশের সহায়তা কেন্দ্র। জেটিতে রয়েছে পুলিশ প্রহরা।
জলযানে যাতে এক সঙ্গে বেশি মানুষ উঠতে না পারেন, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। জেটিতে ঢোকা বেরনোর আলাদা পথ করা হয়েছে। ফেরিঘাটে তৈরি রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। স্পিডবোট নিয়ে ভাগীরথীতে নজরদারি চালাচ্ছে তারা।
শুক্রবারই ফেরিঘাট ঘুরে দেখে গিয়েছিলেন রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কন্নন। শনিবার সকাল থেকে ঘাটে হাজির ছিলেন রানাঘাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রূপান্তর সেনগুপ্ত, এসডিপিও (রানাঘাট) প্রবীর মণ্ডল-সহ পদস্থ পুলিশকর্তারা। ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরা এবং আলো বসানো হয়েছে।
নৃসিংহপুরের বাসিন্দা অপরেশ বিশ্বাস, সুজন বিশ্বাসেরা বলেন, "এখন অনেক বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়। এ রকম নজরদারি আর নিরাপত্তা থাকলে হয়তো সে দিন এতগুলো মানুষকে প্রাণ দিতে হত না।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy