বন্ধুদের সঙ্গে সুমি। নিজস্ব চিত্র
নবম শ্রেণিতে পড়তেই বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল সুমি চৌধুরীর। কিন্তু তাঁর মা গাঁয়ের আর পাঁচটা মায়ের মতো ছিলেন না। মেয়ের পড়া বন্ধ করে ‘বেড়াল পার’ করানোর বদলে তিনি স্বামী-শ্বশুরকে বুঝিয়েছিলেন, কেন নাবালিকা বিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
ব্যতিক্রমী মায়ের মেয়েও হয়েছে অন্য কিসিমের। কলেজের প্রথম বর্ষে পৌঁছে তিনি হয়ে উঠেছেন এলাকার কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের নেত্রী। গত এক বছরে ১৩টি বাল্যবিবাহ রোখায় মুখ্য ভূমিকা ছিল তাঁরই। সচেতনতা শিবিরে গিয়ে এখন মায়ের উদাহরণই তিনি দিচ্ছেন সকলকে।
বুধবার সমশেরগঞ্জে কর্মশালায় গিয়েও তা-ই করলেন সুমি। তাঁর কথায়, “তখন নবম শ্রেণিতে পড়ি। বাড়ি থেকেই শুরু হয়ে যায় বিয়ের তোড়জোড়। পাত্রপক্ষের বাড়িতে চলে যায় আমন্ত্রণও। বিয়েতে রাজি নই আমি। কিন্তু বাবা বা পরিবারের অন্যদের বোঝাতে পারিনি, কেন রাজি নই। সেদিন এক মাত্র আমার মা-ই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। গোটা পরিবারকে মানিয়ে বাধ্য করেছিলেন বিয়ে বন্ধ করতে। আজ কলেজে পড়তে পারছি মায়ের জন্যই। মায়েরাই ভাল বুঝতে পারেন মেয়ের সমস্যা। আমি চাই সব মা আমার মায়ের মতো হোন।”
এ দিন কর্মশালায় হাজির ছিলেন এলাকার কয়েকশো মহিলা। তবে সুমির মা মীরা চৌধুরী ছিলেন না। নামো বাসুদেবপুরের বাড়িতে বসে তিনি বলেন, “মেয়ের বিয়ে বন্ধের আমায় শুধু বোঝাতে হয়েছিল, বছর চোদ্দো বয়সের মেয়ের বিয়ে দেওয়া কেন ঠিক নয়। বাবা-দাদু তাঁরাও তো চান, মেয়ের ভাল হোক। যুক্তি দিয়ে আমি তাঁদের বোঝাতে পেরেছি। সব মায়েরই উচিত সেটা করা, যাতে সুমির মতো সকলেই সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারে।”
সমশেরগঞ্জের বিডিও জয়দীপ চক্রবর্তী জানান, বাল্যবিবাহ বন্ধের প্রচারে সুমিই হবে ওই এলাকায় তাঁদের প্রধান মুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy