চলছে প্রচার। নিজস্ব চিত্র
দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সে আগুন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে একটার পর একটা বাড়িতে। গোটা গ্রাম চেষ্টা করছে আগুন নেভাতে। কেউ বালতি নিয়ে ছুটছেন ডোবার দিকে। কেউ আবার পাইপ ঘাড়ে ছুটছেন।
শেষ ফাল্গুন থেকে আষাঢ়ের শুরু পর্যন্ত গাঁ-গঞ্জে এ বড় চেনা দৃশ্য। গত মাসে ডোমকলের কুচিয়ামোড়া ও লাগোয়া এলাকায় আগুনে পুড়েছে ২০টি বাড়ি। পাশের জেলা নদিয়ার পিপুলখোলা, গোয়াস আর তেহট্টেও আগুনে পোড়ার সংখ্যাটা একই।
বেশির ভাগ জায়গায় অভিযোগ ওঠে যে, দমকল এসে পৌঁছনোর আগেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে সব। কোথাও দমকলের তরফে আবার পাল্টা বলা হয়, ‘লোকজন আর কবে সচেতন হবে বলুন তো?’ নিট ফল, সচেতনতাও চলছে। নিভছে না আগুনও। শুক্রবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে দু’বছরের শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন ভরতপুরের শক্তিপুরের এক দম্পতি। শনিবার ভোরে অগ্নিদগ্ধ হন তিন জনেই। প্রথমে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে এবং পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও তাঁদের কাউকেই বাঁচানো যায়নি। শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান সীমা ঘোষ (২৮) ও কৃষ্ণ ঘোষ (২)। রবিবার দুপুরে মৃত্যু হয় বংশী ঘোষের (৩৫)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরে ঘোষবাড়িতে ধোঁয়া দেখে পড়শিরা ছুটে যান। তাঁরাই তিন জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বংশীর এক আত্মীয় বলরাম ঘোষ বলেন, “মশা মারার ধূপ নাকি শর্ট সার্কিট, কী থেকে যে এমনটা ঘটল বুঝতে পারছি না।” বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশও।
আগুন থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে শনিবার থেকে প্রচার শুরু করেছেন করিমপুর দমকল কেন্দ্রের কর্মীরা। গাড়িতে মাইকে লাগিয়ে চলছে সেই প্রচার। করিমপুর দমকলের ওসি অচিন্ত্যকুমার দাস জানান, ১৪-২০ এপ্রিল অগ্নিনির্বাপক সপ্তাহ উপলক্ষেই দু’জেলাতে প্রচার চালানো হবে। সেই প্রচারে বলা হচ্ছে, যাঁরা উনুনে রান্না করেন, তাঁরা যেন সকাল সকাল রান্নার কাজ শেষ করে জল ঢেলে উনুন নিভিয়ে দেন। সেই দমকলের অভিযোগ, অনেকেই আগুন লেগেছে বলে মিথ্যে খবর দেন কিংবা রাতদুপুরে বার বার ফোন করে বিরক্ত করেন। রাতদুপুরে ফোন করে ‘মনের আগুন নেভানোর’ অনুরোধও করা হয়। জরুরি এই নম্বর নিয়ে কেউ যাতে মজা না করেন, সে ব্যাপারেও বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy