Advertisement
E-Paper

জলঙ্গির জলের নমুনা পরীক্ষা করা হবে

বেশ কয়েক দিন ধরে জলঙ্গির জল কালো হয়ে যাচ্ছিল। শুধু তা-ই নয়, নদীতে মাছ মরে ভেসে উঠতে শুরু করে। এই নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরে নড়ে-চড়ে বসেন মৎস্য দফতরের কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৫
জলঙ্গি নদীতে পচানো হচ্ছে পাট। নিজস্ব চিত্র

জলঙ্গি নদীতে পচানো হচ্ছে পাট। নিজস্ব চিত্র

জলঙ্গির জল বিষিয়ে যাওয়া নিয়ে কার্যত উভয় সঙ্কটে প্রশাসন। কারণ এক দিকে পাট পচাতে না পারলে কয়েকশো কৃষক চরম সঙ্কটে পড়বেন। আবার পাট পচানো বন্ধ করতে না পারলে জল পচে মারা যাবে মাছ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তাই জোর না করে মানুষকে সচেতন করতে সার্বিক প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার মৎস্য দফতর। যদিও ঠিক কী কারণে জলের এই বিষিয়ে যাওয়া, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

বেশ কয়েক দিন ধরে জলঙ্গির জল কালো হয়ে যাচ্ছিল। শুধু তা-ই নয়, নদীতে মাছ মরে ভেসে উঠতে শুরু করে। এই নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরে নড়ে-চড়ে বসেন মৎস্য দফতরের কর্তারা। মঙ্গলবার আনন্দবাজারে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বুধবার গোটা বিষয়টি সরেজমিন দেখতে পলাশিপাড়ায় যান জেলার মৎস্য দফতরের আধিকারিক রামকৃষ্ণ সর্দার। তার আগে কৃষ্ণনগর সংলগ্ন আনন্দনগর ও শম্ভুনগরে গিয়েও তিনি পরিদর্শন করেন।

মৎস্য দফতরের আধিকারিক বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমরা জানতে পারছি যে পিঁয়াজ পচা ও পাট পচা জলেই দূষিত হচ্ছে জলঙ্গি।” তাঁর ব্যাখ্যা, এ বার বৃষ্টি কম হওয়ায় প্রচুর সংখ্যক চাষি জলঙ্গির জলে পাট পচাতে বাধ্য হয়েছেন। তার উপরে মুর্শিদাবাদের সুতির খালের দু’পাশে প্রচুর পিঁয়াজ চাষ হয়। বাতিল পিঁয়াজ ফেলে দেওয়া হয় সুতির খালের ধারে। প্রতি বছরই বর্ষার সময়ে জল পেয়ে সেই পিঁয়াজ পচে যায়। সেই পিঁয়াজ পচা জল এসে মেশে জলঙ্গিতে। প্রতি বারই জুলাই-অগস্টে এই দুই কারণে জলঙ্গির জল কমবেশি দূষিত হয়।

মৎস্যকর্তার দাবি, গত বার এতটা না হলেও জল বিষাক্ত হয়ে মাছ মরে গিয়েছিল। জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘রিপোর্টে দেখা যায়, এক লিটার জলে মাত্র তিন মিলিগ্রাম অক্সিজেন ছিল। মাছ বেঁচে থাকতে গেলে ন্যূনতম ৫ থেকে ৭ মিলিগ্রাম অক্সিজেন প্রয়োজন।’’ সে বারও পাট ও পিঁয়াজ পচা জল থেকেই জলঙ্গির জল বিষাক্ত হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। কারণ নিশ্চিত করতে এ বারও জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

তবে প্রতি বছরই যখন এক ঘটনা ঘটছে তখন তার স্থায়ী সমাধান খোঁজাও জরুরি বলে মানছে প্রশাসন। রামকৃষ্ণ সর্দার বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কথা বলব যাতে এ ভাবে পিঁয়াজ পচা জল না আসে। আর পাট পচানোর বিষয়ে নদিয়া জেলায় প্রাচার করব।”

জলঙ্গি পাড়ের মৎস্যজীবী তারক হালদার বলেন, “পাট পচানো যেমন করেই হোক বন্ধ করতে হবে। তা না হলে দু’এক বছরের মধ্যে জলঙ্গিতে আর কোনও মাছ থাকবে না।”

কিন্তু পাট পচাতে না পারলে চাষিরাই বা শুনবেন কেন? কৃষক সভার জেলা সম্পাদক মেঘলাল শেখ বলেন, ‘‘দু’পক্ষের কথা ভেবেই একটা সমাধান খোঁজা দরকার। জলঙ্গি বদ্ধ হয়ে থাকাতেই বিষিয়ে যাচ্ছে। তার স্রোত ফিরিয়ে দেওয়া গেলে সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। তা ছাড়া নিচু এলাকায় শ্যালো পাম্পের সাহায্যে জল ভরে দেওয়া গেলে সেখানেই চাষিরা পাট পচাতে পারবেন। তাঁদের জলঙ্গিতে যাওয়ার দরকারই হবে না।’’

তবে এর জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের মধ্যে যে সমন্বয় থাকা জরুরি, তা আদৌ আছে কি?

Pollution Jalangi River Fisheries Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy