Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Kali Puja

সাঙে নিষেধ, বিসর্জন হবে নিয়ম মেনেই

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার দুপুর ২টো থেকে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া শুরু হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ০০:২৩
Share: Save:

অতিমারি পরিস্থিতিতে কালী প্রতিমার ভাসান নিয়ে নিজেদের অবস্থানেই অনড় থাকল প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট বারোয়ারির বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। পুজো কমিটির সকলের বিরুদ্ধেই একাধিক ধারায় মামলা করা হতে পারে। তাতে সম্পাদক ও সভাপতির মতো পদাধিকারীদের ছ’মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে। দিন কয়েক আগে কোতোয়ালি থানায় পুজো কমিটিগুলির প্রতিনিধিদের ডেকে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে এ বার বিসর্জনের শোভাযাত্রা বন্ধ। ফলে দীর্ঘদিনের একাধিক প্রথাও বন্ধ থাকবে। কৃষ্ণনগর শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোর মত একাধিক কালীপুজোতেও বাঁশের মাচা বা সাঙে করে প্রতিমা বহন করা হয়। এ বার তা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। অন্য বারের মতো এ বার প্রতিমা রাজবাড়ি পর্যন্তও যাবে না। নির্দিষ্ট সময়ে পুজো মণ্ডপ থেকে লরি, ট্রাক্টর বা চাকা লাগানো নিচু গাড়িতে করে প্রতিমা সোজা জলঙ্গি নদীর কদমতলা ঘাটে নিয়ে যেতে হবে। সেখানে বিসর্জনের জন্য পুরসভা একশো জন বেয়ারা রাখছে। তাঁরাই প্রতিমা বিসর্জনে সহযোগিতা করবেন। আজ, রবিবার দুপুর থেকেই শুরু হয়ে যাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া।

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার দুপুর ২টো থেকে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া শুরু হবে। শক্তিনগর এলাকার প্রতিমা দুপুর ২টোয় তুলতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণী ও রাজবাড়ির আশপাশের এলাকার প্রতিমা তুলতে হবে ৩টে নাগাদ। শহরের মাঝামাঝি এলাকায়, বিশেষ করে জলঙ্গির কদমতলা ঘাট সংলগ্ন এলাকার পুজো কমিটিগুলিকে বিকেল ৪টের মধ্যে মণ্ডপ থেকে প্রতিমা রওনা করাতে হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত রাস্তা দিয়েই বিসর্জন ঘাটে প্রতিমা নিয়ে যেতে হবে। কোনও প্রতিমার ১০ থেকে ১৫ জনের বেশি কমিটির লোক থাকতে পারবেন না বলে প্রশাসন জানিয়েছে। দু’জনের বেশি ঢাকি সঙ্গে নেওয়া যাবে পারবেন না।

কৃষ্ণনগর শহরের কিছু বাসিন্দা শহরের ‘ঐতিহ্য’-এর ধুয়ো তুলে প্রশাসন তথা আদালতের এই সব নির্দেশিকা নিয়ে মৌখিক আপত্তি তুলেছেন। কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইন্ধন জোগানোর বা ভোটের কথা তুলে ‘ব্ল্যাকমেল’ করার প্রবণতাও পুলিশের নজরে এসেছে। এই ‘ঐতিহ্যবাদী’-দের প্রশ্ন, রাজনৈতিক সভা-সমিতির ক্ষেত্রে যখন কোনও বিধিনিষেধ নেই, শুধু পুজোর উপরে কেন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে? প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, এ ব্যাপারে শেষ কথা হাইকোর্টের নির্দেশ। আদালত যদি কখনও রাজনৈতিক সভা-সমিতির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, সে ক্ষেত্রেও প্রশাসন একই ভাবে পদক্ষেপ করবে।

পুজো কমিটিগুলির বেশির ভাগই অবশ্য আদালতের নির্দেশ মেনে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। ক্লাব চ্যালেঞ্জ-এর সম্পাদক বরুণকান্তি ঘোষ বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা এ বার সাং বাতিল করে দিয়েছি। চাকাগাড়িতে করে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে নিয়ে যাব। আমরা সব রকম ভাবে প্রশাসনের সঙ্গে আছি।” বনশ্রী পাড়া বারোয়ারির অন্যতম কর্মকর্তা সৈকত পাল বলেন, “প্রশাসনের নিষেধ করার আগেই অতিমারি পরিস্থিতির কথা ভেবে আমরা প্রতিমা অনেকটা ছোট করে দিয়েছি যাতে ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Immersion Kali Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE