Advertisement
E-Paper

সহজেই হাতে আসছে বন্দুক, উদ্বেগে পুলিশ

 প্রশ্নটা শুধু বৃদ্ধের নয়, প্রশ্নটা পাক খাচ্ছে গোটা নদিয়া জুড়েই। সোমবার ভরসন্ধ্যায় চাপড়ার শিবিরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কওসর পেয়াদা ও তাঁর ছেলে জিন্নাত। কওসর মারা গিয়েছেন সে দিনই। কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন জিন্নাত।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০২
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ভরদুপুরেও চারপাশটা ভাল করে দেখে নেন বৃদ্ধ। তার পরে কানের কাছে মুখটা নিয়ে এসে বলেন, “এত অস্ত্র আসছে কোথায় থেকে, বলুন তো? কিছু একটা হলেই তো ছেলেপুলেরা সব দুম করে পকেট থেকে বের করছে আগ্নেয়াস্ত্র!’’

প্রশ্নটা শুধু বৃদ্ধের নয়, প্রশ্নটা পাক খাচ্ছে গোটা নদিয়া জুড়েই। সোমবার ভরসন্ধ্যায় চাপড়ার শিবিরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কওসর পেয়াদা ও তাঁর ছেলে জিন্নাত। কওসর মারা গিয়েছেন সে দিনই। কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন জিন্নাত।

সম্প্রতি চাকদহে স্থানীয় একটি ক্লাবের সম্পাদক তথা যুব তৃণমূলের কর্মী শান্তনু শীল খুন হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলের সামনেই। সন্ধ্যায় পাড়ার একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চ পরিচালনা করছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে পিস্তল থেকে গুলি করে খুন করা হয়। কিন্তু যে পিস্তল থেকে সে গুলি ছুড়েছিল সেটির হদিস মিলছিল না। পুলিশ সূত্রের দাবি, সোমবার রাতে কালুকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে রবীন্দ্রনগর এলাকায় রাজ্য সড়কের ধার থেকে পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়।

চাপড়ার শিবিরেও কওসর ও তাঁর ছেলেকে গুলি করে অবাধে বেরিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনায় অবশ্য পুলিশ এখনও পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। গোটা বিষয়টি সামনে আসার পরে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের অনেকেই মনে করছেন, দুষ্কৃতীদের কাছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। প্রশ্ন উঠছে, এই ঘটনা কি নেহাত তাৎক্ষণিক উত্তেজনার বশে ঘটিয়ে ফেলা নাকি গোটাটাই পূর্ব পরিকল্পিত? খুনের তদন্তকারীরা মনে করছেন, পূর্ব পরিকল্পিত না হলে কখনওই এক সঙ্গে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখার কথা নয়।

এর আগে একাধিক বার বেআইনি অস্ত্র কারবারে নাম উঠে এসেছে নদিয়ার সগুনা, গয়েশপুর, হরিণঘাটা, জাগুলি-সহ বেশ কিছু এলাকার। দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তার আগে আগ্নেয়াস্ত্রের এমন সহজলভ্যতা কঠিন চিন্তায় ফেলেছে পুলিশ কর্তাদেরও। জেলার এক পুলিশকর্তার কথায়, “ভোটের আগে এটা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়। তবে আমরাও থেমে নেই। কোথা থেকে এ সব অস্ত্র আসছে, কারা আনছে তা সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এ দিকে, শিবিরে ওই গুলি ও খুনের ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখনও থমথমে এলাকা। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। চলছে টহলও। এ দিকে, মঙ্গলবার রাতে পাশের গ্রাম হাঁটরার বাসিন্দা, স্থানীয় হাতিশালা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মহিদুল ইসলাম দফাদার-সহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের অনেকেই শাসক দলের নেতা-কর্মী বলে পরিচিত।

আর সেই কারণে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও ভয়ে গুটিয়ে আছে নিহত কওসারের পরিবার। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, “বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে চাপ আসছে আমাদের উপরে। আমরা আতঙ্কে আছি।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘পুলিশের তদন্তে যাঁদের নাম উঠে আসবে তাঁরা সকলেই শাস্তি পাবেন।’’

Gun police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy