সন্তোষ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
পাঁচ মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে মানুষের ‘লাইফ লাইন’ রেলগাড়ি। ফলে কয়েকশো মানুষ কাজ হারিয়েছেন। কেউ রেলে ফেরি করেন। কেউ স্টেশনে বসে চা, ঘুগনি বিক্রি করেন। কিন্তু তাদের এই সময় সংসার কি ভাবে চলবে। তাদের তো অভাবের সংসার। সকলেরই দিন আনা দিন খাওয়া। ফলে তারা অনেকেই নিজের পেশা বদল করেছেন।
মার্চ মাসের প্রথম থেকেই করোনা পরিস্থিতি অনেক গুজবের সৃষ্টি করেছিল। যেমন, গুজবে মুরগির মাংস খাচ্ছিলেন না অনেকে। তখন অনেকে মুরগির মাংস বিক্রি বন্ধ করে তার বদলে মাছ বিক্রি করছিলেন। তাদের মধ্যে বহরমপুর কুঞ্জঘাটার কার্তিক দাসকেও মাছ বিক্রি করতে দেখা যায়। আছেন বেলডাঙা বড়ুয়া কলোনীর বাসিন্দা বছর ষাটের সন্তোষ চট্টোপাধ্যায়। যিনি গত ৩৫ বছর ধরে লালগোলা-শিয়ালদহ ট্রেন লাইনে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতেন। ভোরবেলা উঠে পেঁয়াজ, লঙ্কা, আদা,নারকেল, রকমারি মশলা দিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন। কিন্তু ট্রেন বন্ধ। দৈনিক রোজগার বন্ধ। সংসার চালাতে আগে থেকে শিখে রাখা রান্নার কাজই এখন সম্বল সন্তোষের। ঝালমুড়ি বিক্রির বদলে বাড়ির অনুষ্ঠানে রান্না করা তার মূল পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এতেও মন্দা। বড় অনুষ্ঠানের কাজ বন্ধ। তবে সম্প্রতি পঞ্চাশ জনের জমায়েত বৈধ হয়েছে বিবাহ ও শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে। কিন্তু নিমন্ত্রিতের সংখ্যা বাড়লে রোজগার বাড়বে। সে উপায় এখনও হচ্ছে না। মঙ্গলবার তিনি তার বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন, “৩৫ বছর ধরে ভোর বেলা উঠে ট্রেনে ঝালমুড়ি বিক্রি করি। কিন্তু সেই মার্চ থেকে ট্রেন বন্ধ। ফলে সেই পেশায় ছেদ পরেছে। কিন্তু গরিবের হলেও সংসার তো রয়েছে। স্ত্রী, পুত্র সকলে রয়েছে সেখানে। ফলে আরও কম বয়সে শেখা রান্নায় এখন করছি।’’ ট্রেনে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতেন ভবতোষ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ৩০ বছর ধরে। তার বয়স পঞ্চাশ। তিনিও মার্চ মাস থেকে কাজ হারিয়ে বসে আছেন। তিনি রান্না না জানলেও রান্না জোগাড়ের কাজ করেন। এটাই এখন তার পেশা। তার কথায়, “’ট্রেনে ঝালমুড়ি বিক্রি বন্ধ। তাই রান্না জোগানের কাজ করি। ছোট খাট রান্নার কাজ পেলেও করি। পেশা বদল ছাড়া আর উপায় কী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy