Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

টাইফাসের সঙ্গে যুদ্ধে ভরসা কন্যাশ্রী

গ্রামীণ মানুষকে স্ক্রাব টাইফাসের ব্যাপারে সচেতন করতে তাই ওই যোদ্ধারাই তাঁর সেরা অস্ত্র।

সুতি ২ বিডিও সৌভিক ঘোষ ব্লক অফিসেই স্থানীয় স্কুলের কন্যাশ্রীদের ডেকে ছিলেন।

সুতি ২ বিডিও সৌভিক ঘোষ ব্লক অফিসেই স্থানীয় স্কুলের কন্যাশ্রীদের ডেকে ছিলেন।

বিমান হাজরা
অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৬
Share: Save:

ডেঙ্গির ছায়ায় ইতিমধ্যেই নতুন আতঙ্কের বীজ বুনে দিয়েছে স্ক্রাব টাইফাস। সে রোগ থেকে রক্ষা পেতে এ বার কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের শরণাপন্ন হল স্বাস্থ্য দফতর।

অজানা পোকায় কামড়ালে ক্ষতে মলম ঘষে দায় না সেরে তাই সটান স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বারস্থ হওয়ার নিদান দেওয়ার নির্দেশ দিল প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আর সে বার্তা গ্রামের দুয়ারে পৌঁছে দিতে ওই যোদ্ধারাই যে ভরসা তা-ও একবার মেনে নিলেন কর্তারা।

এ দিন সুতি ২ বিডিও সৌভিক ঘোষ ব্লক অফিসেই স্থানীয় স্কুলের কন্যাশ্রীদের ডেকে ছিলেন। সেখানেই তাদের বলেন, ‘‘এ বার একটা বড় দায়িত্ব নিতে হবে তোমাদের।’’ তিনি জানান, অতীতে পিছিয়ে পড়া ওই ব্লকে বিভিন্ন সমাজ সচেতনতার প্রকল্পে ‘মনে রাখার মতো’ কাজ করেছে কন্যাশ্রী যোদ্ধারা। গ্রামীণ মানুষকে স্ক্রাব টাইফাসের ব্যাপারে সচেতন করতে তাই ওই যোদ্ধারাই তাঁর সেরা অস্ত্র।

স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌমিত্র শাসমলও বলছেন, “এই মুহূর্তে স্কুলগুলিতে কোথাও পরীক্ষা চলছে। কোথাও পরীক্ষার পর ক্লাস বন্ধ। তাই কন্যাশ্রীদের মাধ্যমেই গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে স্ক্রাব টাইফাসের সতর্ক বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছি। সবার কাছে একটাই বার্তা যে পোকাই কামড়াক, তাঁকে সরকারি হাসপাতালে আনতে হবে। তাতে জ্বর হোক বা না হোক।’’

সতর্কতা

পোকায় কামড়ালে বাড়িতে চিকিৎসা না করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান

বাড়ির লাগোয় ঝোপজঙ্গল থাকলে তা পরিস্কার করতে হবে। কীটনাশক ছড়াতে হবে

এই জীবাণু মানব শরীরে ছড়ায় মূলত বাহ্যিক পরজীবী উকুন, এঁটুলি, বিড়াল, কুকুর। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে

কামড়ের জায়গাটা সিগারেটের ছ্যাঁকার মতো, সঙ্গে জ্বর। এটাই এই রোগের উপসর্গ

শুক্রবার বিভিন্ন স্কুলের শ’দুয়েক কন্যাশ্রী ছাত্রীকে নিয়ে স্ক্রাব টাইফাস কর্মশালা হল সুতি ২ ব্লকে। প্রোজেক্টর নিয়ে তাদের বোঝানো হল স্ক্রাব টাইফাস কী, কী সতর্কতা দরকার, করণীয়ই বা কী।

ডেঙ্গির মতো স্ক্রাব টাইফাসও যে সাধারণের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে উপস্থিত ছাত্রীদের কথাতেই তা স্পষ্ট। কন্যাশ্রী জবা রায় বলছে, ‘‘রোগটার নাম শুনেছি। গ্রামে সবাই তো খুব ভয়ে। কিন্তু কী করণীয় তা কেউ জানেন না। এ বার সেটাই সবাইকে বোঝাব।’’ দীপ্তি সাহাও এমনই এক কন্যাশ্রী, “এত দিন আতঙ্ক ছিল মশা। এ বার এল পোকা। তাতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে মুর্শিদাবাদে। পোকার কামড় সাধারণ কামড় বলে উপেক্ষা না করতে বলা হয়েছে। এটাই সবাইকে বোঝাতে হবে।’’

বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা সুতি। মশারি টাঙানোর রেওয়াজ প্রায় নেই। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি রোধে ১৪ জনের একটি টিম গড়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারাই প্রচার করছে। এ বার স্ক্রাব টাইফাস নিয়েও তেমনই বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার দায় কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Scrub Typhus Kanyashree BDO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE