বাইরে লাঠি, রড, উইকেট হাতে হুঙ্কার দিচ্ছেন ‘কাকু’-রা। কখনও রে-রে করে তেড়ে যাচ্ছেন, কখনও শুরু করছেন মারপিট। কিছু ক্ষণ পরপরই চিৎকার-চেঁচামেচি-গালিগালাজ-আর্তনাদ ভেসে আসছে, আর সেই কীর্তিকলাপ দেখে পাশেই স্কুলবাড়ির ভিতর সিঁটিয়ে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা! আদালতের নির্দেশে পরীক্ষার সময় শব্দদূষণ নিষিদ্ধ। কিন্তু এই মনোনয়ন-কেন্দ্রিক ‘দূষণ’ রুখবে কে!
লালবাগ মহকুমা কার্যালয় চত্বরে রয়েছে তিনটি স্কুল—সিংঘী হাইস্কুল, এমএমসি গার্লস স্কুল এবং লালবাগ (বয়েজ) প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত ২ মার্চ মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শুরুর দিন থেকে মহকুমাশাসক কার্যালয় পাহারা দিতে জটলা করেন শাসক দলের লোক জন। তখনও এলাকার পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়নি। পরে নির্বাচন কমিশন ব্লক কার্যালয়ের পাশাপাশি ৭ ও ৯ মার্চ মহকুমাশাসক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারা যাবে বলে ঘোষণা করতেই ভোজবাজির মতো এলাকার আবহাওয়া বদলে যায়। রাতারাতি পুলিশ সিংঘী হাইস্কুলে ঢোকার গেট থেকে মহকুমাশাসক কার্যালয় যাওয়ার রাস্তায় বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেয়। সেই সঙ্গে ভিড় জমতে থাকে মুখে কাপড় বাঁধা, হাতে লাঠি কর্মী-সমর্থকদের। তাঁরা সারা দিন রাস্তার যে পাশে জটলা বেঁধে বসে থাকেন তার উল্টো দিক দিয়ে ভয়ে-ভয়ে দ্রুত সাইকেল চালিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ে পড়ুয়ারা। গত শনিবার রাস্তায় ধুন্ধুমার বেধে যায় বিজেপি ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। তার জেরে লালবাগ বয়েজ প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিংঘী হাইস্কুল এবং এমএমসি গার্লস স্কুলের পড়ুয়ারা স্কুল ছুটির পরেও বাড়ি ফিরতে পারেনি দীর্ঘ ক্ষণ। আতঙ্কে কান্নাকাটি শুরু করে অনেক ছাত্রছাত্রী। পরে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক পড়ুয়াকে বাড়ি পৌঁছে দেন। সমস্যা তীব্র হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের।
লালবাগ সিংঘী হাইস্কুলে সোমবার সকালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছিল। প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তা থেকে তুমুল চিৎকার ভেসে আসছিল। পরীক্ষার্থীরা তাদের অসুবিধের কথা আমাদের জানাচ্ছিল। কিন্তু আমরা তখন অসহায়!’’ গোলমালের আশঙ্কায় ঝুঁকি না-নিয়ে স্কুল ‘ছুটি’ ঘোষণা করে লালবাগ এমএমসি গার্লস স্কুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy