রোগীর বিছানা মার্জারের দখলে (বাঁ দিকে)। চলছে বিড়াল ধরার অভিযান (ডান দিকে)। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
বিড়ালের দাপটে প্রাণ ওষ্ঠাগত রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকদের। শেষ পর্যন্ত বিড়াল-মুক্ত হাসপাতাল অভিযানে নেমেছেন কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, মা ষষ্ঠীর বাহনটির অবাধ যাতায়াত হাসপাতাল ভবনের ভিতরে বিভিন্ন বিভাগে। যত্রতত্র দেখা মিলছে বিড়াল বাহিনীর। শেষ পর্যন্ত বিড়ালের উৎপাত আটকাতে শুক্রবার অভিযানে নামলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবস্থা এমনই বেগতিক যে, হাসপাতাল থেকে বিড়াল ধরে অন্যত্র ছেড়ে আসার জন্য দর ঠিক হয়েছে বিড়াল প্রতি দেড়শো টাকা!
অভিযোগ, রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের পুরুষ বিভাগ থেকে মহিলা বিভাগ, চিকিৎসকদের কক্ষ থেকে বারান্দা— সর্বত্র দেখা মিলবে বিড়ালের। সংখ্যাতেও তারা নেহাতই কম নয়। বেশির ভাগ সময়ে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি থাকা রোগীদের শয্যার নীচে ফেলে দেওয়া খাবার খেতে ব্যস্ত থাকে তারা। তার উপরে রোগীশূন্য বিছানা পেলে তো কথাই নেই, সেখানে গিয়ে নিদ্রার ব্যবস্থা করে নেয় বিড়াল বাহিনী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বংশবিস্তার করতে করতে হাসপাতালে বিড়ালের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় একশোর কাছাকাছি।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের কথায়, এখনও পর্যন্ত বিড়াল কোনও রোগী বা স্বাস্থ্যকর্মীদের কামড়েছে বা আঁচড় দিয়েছে, এমন নজির নেই। তবে এ ভাবে বিড়ালের উপস্থিতি থেকে যে ডিফথেরিয়া, জলাতঙ্কের মতো রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা রয়ে গিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বিড়ালের কোনও ক্ষতি না করে, তাকে ধরে দূরবর্তী কোনও স্থানে ছেড়ে দিয়ে আসা হবে, যেখানে সে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকতে পারে— আপাতত এমনটাই সমাধান হিসাবে ভাবা হয়েছে। এই শর্তসাপেক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কয়েক জন পশুপ্রেমীর সাহায্য নিয়ে হাসপাতালকে বিড়ালমুক্ত করার অভিযানে নেমেছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে প্রায় ২৫টি বিড়াল ধরা সম্ভব হয়েছে।
শুক্রবার দীপঙ্কর হালদার নামে এক রোগী-আত্মীয় বলেন, ‘‘আগের তুলনায় হাসপাতাল অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন। পরিষেবাও ভাল। তবে বিড়ালের উপদ্রব ক্রমশ বাড়ছে। অসতর্ক ভাবে শয্যা থেকে নামতে গেলে অনেক সময়ে বিড়ালের উপরে পা পড়ে যাচ্ছে।’’
কেন এত দিনেও হাসপাতাল বিড়াল-মুক্ত করা যায়নি? বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘‘বন দফতরকে আমরা বিষয়টি আগেই জানিয়েছিলাম। কিন্তু বন্য প্রাণী না হওয়ার কারণে তারা হাত তুলে নিয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গেও কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিড়াল ধরা ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে হাসপাতালকে এখনও বিড়ালমুক্ত করা যায়নি। আশা করছি, হাসপাতালকে এ বার বিড়াল-মুক্ত করা সম্ভব হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy