Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dhubulia

‘মেয়ে আমার নয়’, তরুণীকে মারধর

ধুবুলিয়া থানার নতুন নপাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামলি খাতুনের সঙ্গে বছরদুয়েক আগে বিয়ে হয় ধুবুলিয়া থানারই কালীনগর এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত শেখের।

শ্বশুড়বাড়ি বিরুদ্ধে তরুণীর অভিযোগ।

শ্বশুড়বাড়ি বিরুদ্ধে তরুণীর অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:০২
Share: Save:

কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই এক তরুণীর উপরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করতে শুরু করেছিল বলে অভিযোগ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তরুণীকে মারধর করে শ্বশুড়বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ ওই তরুণীর। এর পর থেকে তিনি দশ মাসের কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই রয়েছেন। ফেব্রুয়ারি মাসেই ধুবুলিয়া থানায় এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জানান তরুণী। তবে তাঁর দাবি, এই সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। স্বামী নিজের মেয়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করছেন বলেও দাবি তরুণীর।

ধুবুলিয়া থানার নতুন নপাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামলি খাতুনের সঙ্গে বছরদুয়েক আগে বিয়ে হয় ধুবুলিয়া থানারই কালীনগর এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত শেখের। শাহাদাত শেখ পেশায় চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। গত বছরই এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শ্যামলী। তাঁর অভিযোগ, এর পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে তাঁর উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। তরুণীকে এবং শিশুকন্যাকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হত না বলে অভিযোগ ওই তরুণীর।

শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতন ক্রমশ বাড়তে থাকায় এক সময়ে সদ্যোজাত কন্যাকে নিয়ে তিনি বাপের বাড়িতে চলে যান বলে জানিয়েছেন। সেখানে মাসচারেক থাকার পরে তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। কিন্তু সেখানে ফের নির্যাতন শুরু হয় তরুণীর উপরে, এমনটাই তাঁর দাবি। এর পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি মারধর করে বলে অভিযোগ। এবং তরুণীকে সন্তান-সহ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

সেই সময়ে ওই এলাকাতেই এক ননদের বাড়িতে কন্যাসন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নেন শ্যামলি। পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাপের বাড়িতে মায়ের কাছে ফিরে যান। এই ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি ধুবুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। এর পর থেকে বাপের বাড়িতে মায়ের কাছেই আছেন তিনি। ওই তরুণীর বাবা নেই। বাপের বাড়িতে মা ছাড়া আছেন ছোট বোন এবং ভাই। তরুণীর দাবি, সেখানে আর্থিক অনটনে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। কন্যাসন্তানকে নিয়ে কষ্ট করে রয়েছেন।

তরুণীর দাবি, ধুবুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পর প্রায় দেড় মাস কেটে গেলেও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি এই সমস্যার। আপাতত, সুষ্ঠু ভাবে সমস্যার সমাধান চাইছেন ওই তরুণী। কারণ, তাঁর স্বামী যদি তাঁর সঙ্গে সংসার না করেন, তা হলে একা কন্যাসন্তানকে বড় করার পথে আর্থিক অসুবিধায় পড়বেন ওই তরুণী, এমনটাই তাঁর দাবি।

ওই তরুণীর অভিযোগ— ‘‘মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আমার উপরে শ্বশুরবাড়িতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি নির্যাতন শুরু করে। মারধরও করা হয়েছে। আমায় তো বটেই, আমার মেয়েটার খাবার পর্যন্ত কিনে দিত না। স্বামীও বলত—মেয়ে আমার নয়, ওকে খাওয়ানোর দায়িত্ব আমার নয়।’’

তরুণীর দাবি, ‘‘আমায় মারধর শুরু করলে এক ননদ আশ্রয় দেয়। মেয়েটাকে খাবারও দেয়। পরে মায়ের কাছে চলে আসি। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও ফল হয়নি। আমার বাপের বাড়ির তেমন আর্থিক ক্ষমতা নেই। মেয়েকে কী ভাবে বড় করব, জানি না।’’

সোমবার এই প্রসঙ্গে কথা বলতে চেয়ে ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপার ঈশানী পাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dhubulia Domestic Abuse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE