Advertisement
০২ জুন ২০২৪
ধুবুলিয়া

স্ত্রী ‘খুনে’ স্বামী ধৃত, কন্যা-সহ উধাও শাশুড়ি

শৌচাগারে শাওয়ারের পাইপ থেকে তাঁকে ঝুলতে দেখা গিয়েছিল পঞ্চমীর সকালে। আর পাঁচটা আত্মহত্যার ঘটনার নিয়মেই পায়েল পালের (২৫) দেহও হাসপাতাল ঘুরে চলে গিয়েছিল মর্গে। পুলিশও, আত্মহত্যার বাইরে ‘ভাবতে চায়নি’ তেমন কিছু।

বিয়ের দিন পায়েল। — ফাইল চিত্র

বিয়ের দিন পায়েল। — ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২২
Share: Save:

শৌচাগারে শাওয়ারের পাইপ থেকে তাঁকে ঝুলতে দেখা গিয়েছিল পঞ্চমীর সকালে।

আর পাঁচটা আত্মহত্যার ঘটনার নিয়মেই পায়েল পালের (২৫) দেহও হাসপাতাল ঘুরে চলে গিয়েছিল মর্গে। পুলিশও, আত্মহত্যার বাইরে ‘ভাবতে চায়নি’ তেমন কিছু। তবে, বেঁকে বসেছিলেন পায়েলের পরিবার।

তাঁদের দাবি ছিল— আত্মহত্যার প্রশ্ন নেই, মেয়েকে খুন করা হয়েছে।

আর, তার জেরেই রুজু হয়েছিল খুনের মামলা। গ্রেফতারও হয়েছিল ওই তরুণীর স্বামী এবং শ্বশুর।

তবে, দশ দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তের তালিকায় থাকা পায়েলের শাশুড়ি এবং ননদের খোঁজ মেলেনি। খোঁজ পাওয়া যায়নি পায়েলের মাস ছয়েকের শিশু কন্যাটিরও। হুগলির রিষড়া রেলপার্ক এলাকার বাসিন্দা ওই পরিবারটি গেল কোথায়? পুলিশের নির্বিকার জবাব, ‘খোঁজ চলেছে।’

পায়েলের বাড়ি নদিয়ার ধুবুলিয়ায়। বাংলায় এমএ পাশ করার পরেই রীতিমতো সম্বন্ধ করে মেয়েটির বিয়ে হয়েছিল গত বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি। তবে, রিষড়ার কৃষ্ণেন্দু পালের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মেয়ে যে ‘ভাল ছিল না’, তা জানিয়েছেন তাঁর বাবা-মা দু’জনেই,।

পুলিশ জানায়, কৃষ্ণেন্দু একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তা। কাজ করতেন নিউটাউনের রাজারহাট শাখায়। তাঁর মা অবসরপ্রাপ্ত নার্স। বাবাও ছিলেন সরকারি চাকুরে। সদ্য অবসর নিয়েছেন।

গত ৬ অক্টোবর ঝুলন্ত পায়েলকে নামিয়েই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে। তবে, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, মেয়েটি মারা গিয়েছে অনেক আগেই। পরের দিনই পায়েলের মা নমিতা হাজরা খুনের মামলা দায়ের করেন।

মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পরে কৃষ্ণেন্দু-পায়েল আসানসো‌লে ছিলেন। মাস তিনেক পরে কৃষ্ণেন্দু রাজারহাটে বদলি হন। মেয়ের বাপের বাড়ির অভিযোগ, সেখানে এক সহকর্মীর সঙ্গে কৃষ্ণেন্দুর সম্পর্ক তৈরি হয়। পায়েল তা জেনে আপত্তি করাতেই শুরু হয় অশান্তি। তবে, তার আগে কখনও টাকা চেয়ে কখনও ‘বিনা কারণেই’ শাশুড়ি, ননদ এমনকী শ্বশুরের ক্রমাগত গঞ্জনাও শুনতে হত। পায়েলের মা জানান, ‘‘মেয়ে প্রায়ই বলত, এরা গায়েও হাত তোলে মা!’’

পায়েলের জামাইবাবু অমিত রায় বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত, পায়েলকে পরিকল্পিত ভাবে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে। পায়েলের ছোট্ট সন্তানটিও যদি ওদের সঙ্গে থাকে, তাহলে সে সুরক্ষিত নয় বলেই আমাদের আশঙ্কা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Husband Bride
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE