Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Mustard Oil

Mustard oil: জোগানে সমস্যা, ঝাঁঝালো হচ্ছে সর্ষের তেলের দাম

ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ২০০ টাকা কেজি দরে কেনা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৫৯
Share: Save:

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে ভোজ্য তেলের দাম। পেট্রল-ডিজেলের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করছে সর্ষের তেল। শনিবার জেলা জুড়ে স্থানীয় ঘানিতে পেষাই করা সর্ষের খুচরো তেল কেজি প্রতি ১৯০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডেড কোম্পানির তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১৬০-১৭০ টাকা।

অথচ, ২০২০-র মার্চে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে লোকাল সর্ষে তেলের দাম ছিল ১০০-১১০ টাকা প্রতি কেজি। অন্য দিকে, ব্র্যান্ডেড কোম্পানির ভোজ্য তেলের দাম ছিল ৯৫-১০০ টাকা। খুব স্বাভাবিক ভাবেই কড়াইয়ের তেল ক্রমশ ঝাঁঝালো হয়ে উঠছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ২০০ টাকা কেজি দরে কেনা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।

সামনেই রাজ্যের সব চেয়ে বড় উৎসবের মরসুম। তেলের দাম বৃদ্ধির জেরে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নদিয়ার অন্যতম ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী মিহিরকুমার সাহা বলেন, ‘‘২০২০ সালে বিশ্ব জুড়েই লকডাউন ঘোষণা হয়েছিল। সর্বত্র উৎপাদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। সার্বিক ভাবে জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ভোজ্য তেলও ব্যতিক্রম নয়।’’

তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশে সর্ষের তেলের পাশাপাশি অন্য বিকল্প ভোজ্য তেলের বিরাট বাজার আছে। সয়াবিন বা সূর্যমুখী তেলের মতো সাদা তেলের বড় অংশ মালয়েশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। কিন্তু লকডাউনে তার উৎপাদন এবং জোগান বিপুল ভাবে মার খাওয়ায় টান পড়েছে। তেলের দাম বাড়ছে।”

সর্ষের তেলের এমন লাগামছাড়া দাম কল্পনাও করতে পারছেন না খোদ ব্যবসায়ীরাও। গত বারে দেশে সর্ষের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় চার লক্ষ মেট্রিক টন বেশি হয়েছে। তবুও কেন বাড়ছে সর্ষের তেলের দাম?

র জন্য ব্যবসায়ীরা সরাসরি দায়ী করছেন কেন্দ্রের নতুন পণ্য মজুত আইনকে। কেন্দ্র সরকার নতুন আইন করে পণ্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়াই এই মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে দাবি তাঁদের। মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়ীর হাতে সর্ষের মজুত ভান্ডার এর ফলে চলে গিয়েছে। যেমন, এ রাজ্যে সর্ষের বেশির ভাগ রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ থেকে আসে। সাদা তেলের রফতানি কমে যাওয়ায় দেশের বাজারে সর্ষের চাহিদা তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে ওই মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। গত এক সপ্তাহে সর্ষে প্রতি কুইন্ট্যাল ৮২৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৪৫০ টাকা। দাবি, এই দাম বৃদ্ধি এখন চলবে। কেননা এই রাজ্যে নতুন সর্ষে ওঠার সময় পৌষের শেষ থেকে মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র মাস পর্যন্ত।

নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির যুগ্ম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা জানাচ্ছেন, ভোজ্য তেলের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পিছনে যেমন রয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন, মজুতের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়ায় বৃহৎ পুঁজির হাতে চলে গিয়েছে সবটা। তাঁরা মুনাফার কথা ভেবে নীতি নির্ধারণ করছেন। তেমনই জ্বালানির দামবৃদ্ধি পাওয়ায় ভিনরাজ্য থেকে ভোজ্য তেল আমদানির খরচ বাড়ছে। রাজস্থান থেকে কলকাতা প্রতি লরির খরচ গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘‘কোভিড কালে পোস্তা বা হলদিয়া ডকে মাল ওঠানো-নামানোর কাজে এখনও নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। ফলে, জোগানের সমস্যা মিটছে না। ভোজ্য তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mustard Oil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE