Advertisement
E-Paper

সভাপতির মুখ বদলে দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

বুধবার বিকালে দেবগ্রামের এক বেসরকারি ভবনে পানিঘাটার অঞ্চল তৃণমূলের নেতৃত্ব পুলিশ পাহারায় আলোচনায় বসেন। সেখানে ছিলেন বর্তমান বিধায়ক হাসানুজ্জামান শেখ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, ব্লক যুব সভাপতি জিয়ারুল রহমানেরা।

সন্দীপ পাল

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০২
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের কোন্দল। কালীগঞ্জ ব্লকের পানিঘাটা পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি নির্বাচন ঘিরে বুধবার গোলমাল বেধে গেল।

বুধবার বিকালে দেবগ্রামের এক বেসরকারি ভবনে পানিঘাটার অঞ্চল তৃণমূলের নেতৃত্ব পুলিশ পাহারায় আলোচনায় বসেন। সেখানে ছিলেন বর্তমান বিধায়ক হাসানুজ্জামান শেখ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, ব্লক যুব সভাপতি জিয়ারুল রহমানেরা। দলীয় সূত্রের খবর, পানিঘাটা অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করে নতুন সভাপতি আজিমুদ্দিন শেখের নাম ঘোষণার পরেই সভায় চেয়ার ভাঙচুর ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। সভা থেকে অনেকেই বেরিয়ে যান। যদিও পুলিশের দাবি, ওই সভার কারণে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি, হয়েছিল কালীপুজোর ভাসানের জন্য।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, পানিঘাটা পঞ্চায়েতের দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রয়েছেন সাদেরুল শাহনওয়াজ। কিছু দিন ধরে তৃণমূলের অন্দরে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল যে অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তন হবে। তা নিয়ে পানিঘাটা অঞ্চলের নেতৃত্বের একাংশ ভুব্ঝ হয়ে ওঠেন। অঞ্চলের মোট ২২ জন বুথ সভাপতির মধ্যে ১৮ জন ও প্রাক্তন কিছু নেতা স্বাক্ষর করে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্রের কাছে আর্জি জানান যাতে অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তন করা না হয়। অভিযোগ করা হয়, পঞ্চায়েত ভোটের পরে পানিঘাটা অঞ্চল প্রধান নির্বাচন করা নিয়ে ২১ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে।

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এই টানাপড়েনের পিছনে রয়েছে প্রাক্তন ও বর্তমান বিধায়কের দ্বন্দ্ব। প্রাক্তন বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সাদেরুল শাহনওয়াজ। পানিঘাটা পঞ্চায়েতের কিছু কাজে দুর্নীতির প্রতিবাদও করেছিলেন তিনি যা দলের সকলের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তার জেরেই তাঁর উপরে

কোপ পড়েছে।

তৃণমূলের একাংশের দাবি, অঞ্চল সভাপতি অপসারণের জন্য জেলা নেতৃত্বের যে অনুমতি লাগে তা পাওয়া যায়নি। গা-জোয়ারি করে সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন যাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে সেই আজিমুদ্দিন শেখ সবে গত পঞ্চায়েত ভোটে জিতে এসেছেন। দলের সংগঠনেও তাঁর বিশেষ প্রভাব নেই।

সাদেরুল বলেন, ‘‘আমি প্রথম থেকে তৃণমূল করেছি নাসিরুদ্দিন সাহেবের হাত ধরে। ওঁর বাড়ি না যাওয়ার জন্য নানা ভাবে চাপ দেওয়া হলেও শুনিনি। তার উপরে দুর্নীতির প্রতিবাদ করাতেও সভাপতির পদ থেকে আমায় অপসারণের চেষ্টা চালাচ্ছে কিছু নতুন দলে আসা নেতা। এটা আমরা হতে দেব না। প্রয়োজনে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করব।’’

তবে সাদেরুল-বিরোধীদের বক্তব্য, বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে পানিঘাটা পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ফল ভাল হয়নি। লোকসভা ভোটে অন্য এক জনকে পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়া হতেই ফল ভাল হয়। তার পর থেকেই সাদেরুলকে সরানোর ভাবনা চলছে। বিধায়ক হাসানুজ্জামান শেখ বলেন, ‘‘সভায় কোনও সমস্যা হয়নি। এ সব বাজে কথা। ব্লক সভাপতির মনে হয়েছে, তাই অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। আমি যতটা জানি, তাতে ওঁর সেই এক্তিয়ার আছে। এই বিষয়ে যা বলার উনিই বলবেন।’’

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ও দাবি করেন, ‘‘অঞ্চল সভাপতি নির্বাচন ব্লক কমিটির হাতে। সাংগঠনিক দিক থেকে আমাদের মনে হয়েছে, আগের অঞ্চল সভাপতিকে সরানো দরকার, তাই সরানো হয়েছে। সভায় কোনও ঝামেলাও হয়নি।’’

বর্তমানে তৃণমূলের জেলার কো-অর্ডিনেটার নাসিরুদ্দিন শেখ আবার বলেন, ‘‘দলের সংবিধান অনুযায়ী, জেলা নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া এই রদবদল সম্ভব নয়। আমি মহুয়া মৈত্রর সঙ্গে কথা বলেছি। দলে কিছু নতুন লোক ঢুকে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে।’’

Kaligunj TMC Kaligunj Panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy