Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Jalangi

তহিরের পদ শূন্যই, কোন্দলে আরও দীর্ণ দল

জোড়া খুনে অভিযুক্ত সাগরপাড়া এলাকার তৃণমূল নেতা তথা বহিষ্কৃত জলঙ্গি ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডল প্রায় এক বছর ধরে ফেরার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলঙ্গি শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৩৪
Share: Save:

তাকে বহিষ্কার করতে দলের সময় লেগেছিল প্রায় সাত মাস। কিন্তু জলঙ্গি (উত্তর) ব্লক সভাপতির সেই পদে নতুন কাউকে বসানোর ‘সাহস’ এখনও দেখাতে পারেনি তৃণমূল। বিরোধীরা মনে করেন, দলের এই দো-টানার জন্যই ওই এলাকায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে তৃণমূল। এমনকি, দলের অন্দরের খবর, গত এক বছর ধরে জলঙ্গি জুড়ে যে দলীয় কোন্দল দেখা দিয়েছে, তার অন্যতম কারণ ব্লক সভাপতির শূন্যপদে কাউকে নিয়োগ না করায়। জলঙ্গির এক পরিচিত তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতির শূন্য চেয়ারে দল কাউকে বসাতে না পারায় নেতৃত্বের ব্যাপারটাই উবে গিয়েছে। ফলে, এমন ছন্নছাড়া অবস্থা।’’

জোড়া খুনে অভিযুক্ত সাগরপাড়া এলাকার তৃণমূল নেতা তথা বহিষ্কৃত জলঙ্গি ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডল প্রায় এক বছর ধরে ফেরার। কিন্তু সেই পদে কাউকে নিয়োগ করা নিয়ে দলের এমন দো-টানা কেন? তৃণমূলের অনেকেই মনে করেন, তহিরুদ্দিনের প্রভাব-প্রতিপত্তি কেবল দলে ছিল না, পুলিশ-প্রশাসন মহলেও তার প্রভাব ছিল বিস্তর। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, এখনও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা পদ্মার ইলিশ-চিংড়ি মাছ পাঠিয়ে থাকেন কর্তাদের কাছে। ফলে তার টিকি ছোঁয়া পুলিশের পক্ষে কঠিন! জেলা পুলিশের কর্তাদের অবশ্য দাবি, তহিরকে ধরার জন্য চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সীমান্তের জনপদে কান পাতলে এখনও শোনা যায়, ‘না থেকেও তহির রয়েছেন’। তহিরের একান্ত অনুগামীরা দিন কয়েক আগেও সেই ‘সাহসেই’ বঙ্গধ্বনি যাত্রার নামে মিছিল করে বলে অভিযোগ।

সাহেবনগর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত তহিরুদ্দিন গত ২৯ জানুয়ারি এনআরসি বিরোধী মিছিলে গুলি চালিয়ে দুই নিরীহ গ্রামবাসীকে খুন করে সরে পড়ে। কিন্তু তাকে বহিষ্কার করতে সাত মাস সময় লাগিয়েছিল দল। তারপর থেকেই ওই এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব কমতে থাকে। তার বদলে কোনও নতুন সভাপতি নিয়োগ করা হয়নি। তবে বহিষ্কার করা হলেও এখনও পর্যন্ত জলঙ্গির উত্তর অঞ্চলের তহিরের চেয়ারে কাউকে বসানো হয়নি। বিরোধীদের দাবি, আদতে তহিরকে লোক দেখানো বহিষ্কার করা হয়েছে। তার জায়গায় অন্য কাউকে বসানোর ক্ষমতা নেই তৃণমূলের। ফলে সাংগঠনিক কাজ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দল। কিন্তু কোনও অজানা কারণে সেখানে নতুন সভাপতি নিয়োগ করা হচ্ছে না। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলছেন, ‘‘আদতে জেলা কমিটি গঠন করা হয়নি বলেই সভাপতির পদ শূন্য রয়েছে। কমিটি গঠন হচ্ছে না বলে ওই পদ পূরণ করা যাচ্ছে না।’’

জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, ‘‘গোটা ঘটনায আই-ওয়াশ, আদতে তহিরের বিকল্প নেই তৃণমূলে। অন্য কাউকে তহিরের চেয়ারে বসালে তৃণমূল নেতাদের চেয়ার ধরে রাখা কঠিন হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalangi TMC Inner conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE