E-Paper

এঁদো ডোবার ভাড়া ১০-১৫ হাজার

ডোমকলের হিতানপুর এলাকার চাষি সাইফুল মণ্ডল বলছেন, "অন্য বছর রাস্তার পাশের নয়ানজুলি থেকে খাল-বিলে যে জল জমে তাতেই পাট পচানো হয়ে যায় আমাদের।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫৯
পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাঁক। ডোমকলে।

পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাঁক। ডোমকলে। ছবি সাফিউল্লা ইসলাম।

যে ডোবাটার দিকে ফিরেও তাকাতো না কেউ, সেটারই এখন কদর চরমে। ডোবার মালিকের কাছে সকাল সন্ধ্যায় ঘুরপাক খাচ্ছেন একাধিক চাষি। আর সুযোগ বুঝেই দর হাঁকছেন ডোবা বা পুকুরের মালিকেরা। বাধ্য হয়ে জমিতে থাকা পাট পচাতে দেওয়ার জন্য ডোবা বা পুকুরের মালিকদের মোটা টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে চাষিদের। সুযোগ বুঝেই ডোবা বা পুকুর মালিকদের পোয়াবারো অবস্থা। যে যেমন পারছেন, হেঁকে দিচ্ছেন পচা ডোবার দাম। চাষিদের দাবি, এ বছর বৃষ্টি নেই, ফলে নদী-নালা, খাল, বিল কোথাও জলের দেখা নেই। বাধ্য হয়েই পুকুর ভাড়া নিয়ে কোনও ক্রমে পাট ঘরে তোলার চেষ্টা করছি।

ডোমকলের হিতানপুর এলাকার চাষি সাইফুল মণ্ডল বলছেন, "অন্য বছর রাস্তার পাশের নয়ানজুলি থেকে খাল-বিলে যে জল জমে তাতেই পাট পচানো হয়ে যায় আমাদের। কিন্তু এ বছর জলের দেখা না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছি। বিঘা দুয়েক জমির পাট কোথায় পচাব এখনও পর্যন্ত ঠিক করতে পারিনি। পাড়ার একটি পুকুর ভাড়া নিতে গিয়ে ভাড়া শুনে পিছিয়ে আসতে হয়েছে।’’

ওই এলাকার চাষি গোলাম মোর্তজার একটা ছোট্ট পুকুর রয়েছে, ৬০০০ টাকায় সেটা ভাড়া দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ডোমকলের কুপিলা গ্রামের চাষি আব্দুর রশিদ মণ্ডল বলছেন, "এ বছর নদীতে বিন্দুমাত্র জল নেই। ফলে হাজার হাজার টাকা দিয়ে পুকুর বা জলা ভাড়া নিয়েই পাট পচাতে হচ্ছে আমাদের।’’ রানিনগরের এক পুকুর মালিক বিল্লাল হোসেন বলছেন, ‘‘এ ভাবে যে কখনও বাড়ির পিছনে থাকা এঁদো পুকুরটা আমার নিজেরও কাজে লাগবে, আবার সেখান থেকে ভাল ভাড়াও পাওয়া যাবে, তা কল্পনাও করিনি।’’

কোথাও এক বিঘা পুকুরের ভাড়া ১০ হাজার কোথাও আবার ১৫ হাজার হেঁকে দিচ্ছেন পুকুর মালিক। বাধ্য হয়েই চড়া দরে পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট পচাতে হচ্ছে চাষিদের। গড়াইমারি এলাকার চাষি আব্দুল কুদ্দুস বলছেন, ‘‘বিঘা খানেক জমির পাট পচাতে পুকুর ভাড়াই লেগে গেল দু'হাজার টাকা। অন্যান্য খরচ এখনও বাকি। পাট চাষ করে এ বছর খরচটা উঠবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহে আছি।’’ জলঙ্গির চাষি রেজাউল করিম বলছেন, ‘‘পদ্মার পাড় ছাড়া সর্বত্র এক অবস্থা। এত চড়া দাম হাঁকছেন পুকুর মালিকরা যে বাধ্য হয়ে পিছিয়ে আসতে হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Domkal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy