Advertisement
E-Paper

বাতিল ৭ দিন লকডাউন

শুক্রবার নদিয়ার জেলাশাসক বিভু গোয়েল নিজেরই করা ৮ থেকে ১৪ অগস্টের লকডাউনের নির্দেশিকা বাতিল করে দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪২
বেপরোয়া: আজ, শনিবার ফের লকডাউন। তার আগে শুক্রবার কৃষ্ণনগরে জাতীয় সড়কে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বেপরোয়া: আজ, শনিবার ফের লকডাউন। তার আগে শুক্রবার কৃষ্ণনগরে জাতীয় সড়কে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

টানা সাত দিন লকডাউন হবে শুনে দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে দু’দিন ধরে দোকান-বাজারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে জনতা। কিন্তু এক মাত্র নবদ্বীপ বাদে নদিয়ার আর সব জনবহুল এলাকায় সেই লকডাউনের নির্দেশই বাতিল হয়ে গেল। আজ, শনিবার রাজ্যের আর সব এলাকার সঙ্গে নদিয়াতেও অবশ্য সম্পূর্ণ লকডাউন হচ্ছে।

শুক্রবার নদিয়ার জেলাশাসক বিভু গোয়েল নিজেরই করা ৮ থেকে ১৪ অগস্টের লকডাউনের নির্দেশিকা বাতিল করে দিয়েছেন। তার পরিবর্তে ১৩ ও ১৪ অগস্ট জেলার নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় 'এক্সটেন্ডেট কন্টেনমেন্ট জ়োন' ঘোষণা করে সেখানে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ঘোষণা করলেন। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, দু’দিনের বেশি লকডাউনে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি না থাকাতেই এই সিদ্ধান্ত বদল। সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের কেন এই আগ বাড়িয়ে লকডাউন ঘোষণা করা আর কেনই বা পিছিয়ে আসা, তার সদুত্তর মেলেনি।

তবে 'এক্সটেন্ডেট কন্টেনমেন্ট জ়োন' প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, "যেখানে যেখানে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে সেই সব এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন বাড়িয়ে নিয়েছি। সেই সব এলাকায় কন্টেনমেন্টের নিয়ম কড়া ভাবে পালন করা হবে যাতে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে।"

গত ১৫ দিনে জেলার যে সমস্ত এলাকায় বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলছিল, সেই সব এলাকাতেই সংক্রমণে রাশ টানতে টানা সাত দিন কড়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। তার আগেই, রাজ্যের দুই লকডাউনের দিনের মাঝে বৃহস্পতি ও শুক্রবার রানাঘাট ও কুপার্সে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সাত দিন লকডাউনের কথা জানানোর পরে তারা তা বাতিল করে দেয়। এ দিকে লকডাউনের নির্দেশিকা জারি হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে সাত দিনের খাবার ও অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত করার জন্য দোকানে-বাজারে ভিড় ঝাঁপিয়ে পড়ে। সব রকম বিধি উপেক্ষা করে বৃহস্পতি ও শুক্রবার মুদির দোকান থেকে শুরু করে মাছ ও আনাজের বাজারে হামলে পড়ে মানুষ। তখনই প্রশ্ন উঠছিল, লকডাউন শুরুর আগেই এই ভিড় হিতে বিপরীত হয়ে গেল কি না। এ বার লকডাউনই বাতিল হয়ে যাওয়ায় শুধু ক্ষতির অঙ্কটাই হাতে রইল।

কিন্তু এমনটা হল কেন? গত ৫ অগস্ট এই টানা লকডাউনের নির্দেশিকা ঘোষণা করার পিছনে জেলা প্রশাসনের দাবি ছিল, যে সব এলাকায় দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে, এক সঙ্গে অনেক জন করে আক্রান্তের সন্ধান মিলছে, সেই সব এলাকায় সংক্রমণ কমিয়ে আনা। সেই সঙ্গে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কাও কমিয়ে ফেলা। সেই মতো খাবার মজুত করার জন্য মাঝখানে দু’দিন সময় দিয়ে ওই সব এলাকায় সাত দিন লকডাউনের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে কী এমন ঘটল যাতে টানা লকডাউনের আর প্রয়োজন থাকল না? পাল্টে গেল সিদ্ধান্ত?

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, রাজ্যের মুখ্যসচিবের নির্দেশ ছিল যে জেলাশাসকেরা প্রয়োজন মতো নিজেদের জেলায় লকডাউন করতে পারবেন। সেই নির্দেশিকা মেনেই নদিয়াতেও কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, শান্তিপুর, চাকদহ, কল্যাণীর মতো জনবহুল জনপদে এবং বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় সাত দিন লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী এক সপ্তাহে দু’দিনের বেশি লকডাউন না করার কথা বলতেই পরিস্থিতি বদলে যায়।

নদিয়ার জেলাশাসক অবশ্য অন্য যুক্তির অবতারণা করেছেন। তাঁর দাবি, "আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, লকডাউনের আগে খাবার মজুত করার জন্য মাঝের দু’দিনই যথেষ্ট। কিন্তু জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খবর আসতে শুরু করে যে সাত দিনের কথা ভেবে লোকে বাজারে প্রচুর ভিড় করছে। লোকে যাতে আরও ক’টা দিন কেনাকাটার সুযোগ পায়, তার জন্যই আমরা সিদ্ধান্ত বদল করেছি।"

West Bengal Lockdown Coronavirus in West bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy