দফতর খুলেছে চার বছর আগে। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জঙ্গিপুরে এসে একাধিক বার আশ্বাস দিয়েছেন স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবেই কাজ করবে জঙ্গিপুর পরিবহণ দফতর। কিন্তু আশ্বাসই সার।
বহরমপুর পরিবহণ দফতর থেকে পুরনো গাড়ির ডিজিটাল নথিপত্র না আসার কারণে চার বছরেও সাবালক হতে পারল না জঙ্গিপুর পরিবহণ দফতর।
এমনকী, শুরুতে একজন সহকারী পরিবহণ আধিকারিক থাকলেও দু’বছর ধরে কর্তাহীন দফতরে শুধুমাত্র নতুন মোটরবাইক ও ছোট গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না সেখানে।
এতদিন প্রতিটি জেলার সদর শহরে একটি করে জেলা পরিবহণ দফতর খুলে কাজ চলত সারা রাজ্যে। ফলে বহরমপুর সহ সর্বত্রই কাজের চাপ ছিল এতটাই যে দালাল রাজের কবলে পড়ে নাজেহাল হতেন মানুষ। এই দালাল দাপট কমাতেই ২০১৩ সালের এপ্রিলে জঙ্গিপুর-সহ পাশের জেলা বীরভূমের রামপুরহাট, বোলপুর, মালদার চাঁচল, নদিয়ার কল্যাণী-সহ মহকুমাশাসকের দফতরগুলিতে ২৪টি বাড়তি ‘এআরটিও’ অফিস খোলা হয়। সর্বত্র ‘ই-বাহন’ ও ‘ই-সারথি’ সার্ভার কাজ শুরু করলেও জঙ্গিপুর এখনও আটকে আছে আংশিক ‘ই-বাহনেই’।
পরিবহন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলায় যত গাড়ি রেজিস্ট্রেশন হয়ে রয়েছে তার প্রায় অর্ধেকটাই জঙ্গিপুর মহকুমায়। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়, এমডিআই, ছাড়াও একাধিক চাল কল, সিমেন্ট কারখানা, বিড়ি কারখানা, দুদু’টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ফরাক্কা ব্যারাজ সব কিছুই জঙ্গিপুর মহকুমায়। ফলে গাড়ির সংখ্যাও বেশি। ফরাক্কা থেকে এখন বহরমপুর পরিবহণ দফতরে কাজ করতে মানুষকে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি যাতায়াত করতে হয়। সে দুর্ভোগ কমাতেই রাজ্য সরকার জঙ্গিপুরে পরিবহণ দফতর খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
অভিযোগ, দফতর খোলা হলেও চার বছরে কোনও কর্মী আসেনি সেখানে। মহকুমা শাসকের দফতর থেকে দু’জন কর্মী পাঠিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে অফিস চালানো হচ্ছে। পরে একজন সহকারী পরিবহণ আধিকারিক ও এক কর্মী পাঠিয়ে নতুন মোটরবাইক ও ছোটগাড়ির রেজিস্ট্রেশন চালু হয় জঙ্গিপুরে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।
জঙ্গিপুর মহকুমায় অন্তত ১০ হাজারের বেশি পুরনো লরি ও বাস আছে যাদের বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন রয়েছে জেলা সদর বহরমপুরে। এ ছাড়াও পুরনো মোটরবাইক ও ছোট গাড়ির সংখ্যাও কম নয়। রয়েছে নতুন ও পুরনো ড্রাইভিং লাইসেন্স। সেই পুরনো গাড়ির তথ্য-সহ সফ্টওয়ার জঙ্গিপুর অফিসে আনা যায়নি চার বছরেও।
জঙ্গিপুরের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও মহকুমা তৃণমূলের সভাপতি বিকাশ নন্দ বলছেন, “সরকারের সদিচ্ছাকে আটকানোর পিছনে আমলা ও দালালদের আঁতাত রয়েছে। বিষয়টি পরিবহণ মন্ত্রীকে জানানো হবে।”
জেলার পরিবহণ আধিকারিক চিন্তামণি প্রামাণিক বলেন, “ই-বাহনের’ কাজ শুরু হলেও ‘ই-সারথি’ সফ্টওয়ারের কাজ জঙ্গিপুর পরিবহণ দফতরে এখনও চালু করা যায়নি। পরিকাঠামো তৈরি না হলে সব চালু করা যাবে না। নির্দিষ্ট করে সে সময়সীমা বলাও সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy