যুদ্ধ জয়ের হাসি। নিজস্ব চিত্র
বিয়ে করতে এসে কন্যাশ্রীযোদ্ধাদের বাধায় ফিরতে হল পাত্রকে। শুধু তাই নয়, নাবালিকা পাত্রীর বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে জানা গেল তার বয়সও কুড়ি পেরোয়নি।
তাই পাত্রীর পরিবারের সঙ্গে বিয়ে বন্ধের মুচলেকা দিতে হল পাত্রের বাবাকেও। সোমবার সমশেরগঞ্জের দোগাছি নওপাড়া পঞ্চায়েতের লস্করপুরের ঘটনা।
সকাল থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিয়ে বাড়ির ব্যস্ততা। লস্করপুরের জিয়াউর শেখের বাড়িতে আত্মীয়েরাও হাজির। বাড়ির বড় মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রুমকি খাতুনের বিয়ে আয়োজন সারা। এক ব্যাচ নিমন্ত্রিতের খাওয়াও পাশের গ্রাম উমরাপুর থেকে জনা পঁচিশ বরযাত্রী নিয়ে হাজির বর সুফিয়ান শেখ ও তার বাবা। ঠিক তখনই বাড়িতে পুলিশ নিয়ে হাজির জনা পাঁচেক কন্যাশ্রীযোদ্ধা— হাবিবা, সুমি, পপি, উর্মিলারা। সঙ্গে সমশেরগঞ্জের সমাজকল্যাণ আধিকারিক-সহ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা।
তাদের দেখে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বিয়ে বাড়িতে। নিমন্ত্রিতেরা যে যার মতো গা ঢাকা দিতে ব্যস্ত। থমকে গেছে পরিবেশনের ব্যস্ততাও।
কন্যাশ্রী যোদ্ধা সুমি চৌধুরী জানান, রুমকিকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল সে নাবালিকা। কিন্তু তার বাবা জিয়াউর রহমান প্রথমে তা মানতেই রাজি হননি। কিন্তু মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড আনতে দেখা যায়, তার বয়স মোটে ষোলো। ততক্ষণে সরে পড়েছে পাত্রপক্ষ। মিনিট কুড়ি পরে এক প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে খোঁজ মেলে তাদের। দেখা যায়, পাত্রের বয়সও কুড়ির নীচে।
পাত্রের বাবা নুরুল শেখ অবশ্য মানতেই রাজি নন ছেলে নাবালক। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে এখন রাজমিস্ত্রির কাজে ভাল আয় করে। তা হলে বিয়ে দিতে অসুবিধে কোথায়?” কিন্তু নাবালিকাকে বিয়ে করাও অপরাধ সে কথা বলায় এ বার সুর নরম পাত্রপক্ষের। পাত্রের বাবা বলেন, “আমরা জানতাম না যে পাত্রীর বয়স ১৬ বছর। তাই না জেনেই সম্পর্কটা করে ফেলেছি স্যার।’’
সমশেরগঞ্জ ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক মণীশকান্তি দাস বলছেন, “এই বিয়ে আটকানোটা ছিল যথেষ্ট ঝুঁকির। তবে কন্যাশ্রীদের তৎপরতার জন্যই বিয়ের ভরপুর আয়োজনের মধ্যেও বিয়ে বন্ধ করাতে পেরেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy