প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা
মাচার একটা তাজা লাউয়ের সঙ্গেই বদলে যেত কেজি দুয়েকের ইলিশ। সে দু’বছর আগের কথা। ছবিটা বদলে গেছে। এখন ভরা ভাদ্রে পদ্মায় নেমে মঙ্গল হালদারকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতেই। কালেভদ্রে এক একটা ইলিশের দেখা মিললেও তার ওজন মেরেকেটে পৌনে এক কেজি।
কিন্তু মাছের দিন এমন হঠাৎ করে নিভে এল কেন? ভাদ্রের ভরা পদ্মাপাড়ে দাড়িয়ে মঙ্গলের দাবি, ‘‘কাপড়া জলটাই সব শেষ করে দিল কর্তা। মাছ তো দূরের কথা, মাছের পোনা থেকে ডিম— নষ্ট হয়ে যায় ওই জালে। বছর কয়েকের মধ্যেই আমাদের পদ্মা নদী থেকে মাছই হারিয়ে যাবে, দেখবেন।’’
বছর কয়েক আগেও বাবার সঙ্গে পদ্মায় মাছ ধরতে এসে মাছের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে ফেরার সময় হিমসিম খেতে হত গুঁড়িপাড়ার ধনঞ্জয় হালদারকে। আর এখন, সে বাপ দাদার আমলের পেশা বদলে বাসনের ঝুড়ি নিয়ে ঘুরছে গ্রামে গ্রামে। তারও একই দাবি, ‘‘সব খেল ওই কাপড়া জালে জড়িয়ে গেছে।’’
জলঙ্গি সীমান্তের গ্রাম লালকুপের বাসিন্দা বাবলু মন্ডল বলছেন, ‘‘দেখতে একেবারে মশারির মতো। জল ছাড়া আর কিছুই ভেদ করে যেতে পারবে না, কাপড়া জালে খুব ছোট মাছের চারা এবং ডিমও নষ্ট হয়ে যায়। যা সামনে পড়বে একেবারে ছেঁকে তুলে আনবে।’’ আর দীর্ঘদিন বিনা বাধায় এই জাল ব্যবহার করার ফলে পদ্মা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চারা।
কাপড়া জাল নিয়ে আইন রয়েছে। তবে সে আইনের প্রয়োগ তেমন নেই, ফলে মৎস্যজীবীদের একাংশ প্রশাসনের গাফিলতিতেই নির্বিচারে ব্যবহার করছে কাপড়া জাল।
সব জেনেও কেন মৎস্যজীবীরা এই জাল ব্যবহার করছেন কেন সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সীমান্তের পদ্মাপারের বামনাবাদ এলাকার মহিদুল সেখ বলছেন, ‘‘আদতে যারা মাছের মর্ম বোঝে না তারাও এখন মৎস্যজীবী। ভাঙনে সব হারিয়ে পদ্মায় নেমে পড়েছেন তারা মাছ ধরতে। তাদের কাছে একটু বেশি মাছ পাওয়াটাই বড় কথা। তাতে মাছের বংশ থাকবে কিনা তা নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই ওদের।’’ রানিনগর ২ বিডিও পার্থ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘কাপড়া জালের বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছি। মৎস্যজীবীদের মধ্য প্রচার শুরু হয়েছে আটক করা হয়েছে বেশ কিছু জাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy