Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Bhagirathi River

পাট-পচা গন্ধ জলে, আবার ঢুঁ সেই ভূগর্ভে

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জল শহরের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আগেই সমস্যায় পড়ে কৃষ্ণনগর পুরসভা।

ভাগীরথী নদীর জল আটকাল কৃষ্ণনগর পুরসভা।

ভাগীরথী নদীর জল আটকাল কৃষ্ণনগর পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ০৭:০৭
Share: Save:

জলে পাট পচা গন্ধ। অভিযোগ, পান তো দূর, সেই জল অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে গত বছরের মতো এ বারও ভাগীরথীর জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে কৃষ্ণনগর পুরসভা। অবশ্য বিকল্প হিসাবে পাম্প চালু করে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ ঘাটের পাশে ভাগীরথী নদী থেকে জল তুলে ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’-এ সেই জল পরিশোধন করে পাইপের মাধ্যমে নিয়ে আসা হচ্ছে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণনগর শহরের ভিতরে লালদিঘিতে। প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জল প্রকল্পের উদ্বোধন হয় গত বছর।

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জল শহরের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আগেই সমস্যায় পড়ে কৃষ্ণনগর পুরসভা। দেখা যায়, পরিশোধনের পরেও ভাগীরথীর জলে তীব্র পাট পচা গন্ধ। তদন্তে দেখা যায়, স্বরূপগঞ্জে ভাগীরথী ও জলঙ্গি নদীর সংযোগ স্থলে যেখান থেকে প্রকল্পের জল তোলা হচ্ছে, সেখানে জল ঘোলা ও কালো। জলে তীব্র পাট পচা গন্ধ। আশপাশের এলাকায় ভাগীরথী ও জলঙ্গি নদীতে পাট পচানো হয়। সেই জল এসে মিশছে স্বরূপগঞ্জ এলাকায় ভাগীরথীর জলে। পরিশোধন করেও জল থেকে পাট পচা গন্ধ মুক্ত করা যাচ্ছে না। ফলে জল সরবরাহ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুরসভা। পুরনো পদ্ধতিতে অর্থাৎ ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

এ বারেও সেই একই পরিস্থিতি। এ বারেও সেই পাম্প চালু করে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করতে হচ্ছে। আর তাতেই একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। প্রতি বছরই কি তা হলে অগস্টে ভূগর্ভস্থ জল খেতে হবে শহরবাসীকে? শহরবাসীকে মূলত আর্সেনিকমুক্ত জল সরবরাহ করতেই কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই প্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে বর্তমানে ভূগর্ভস্থ যে জল সরবরাহ হচ্ছে তা কি আর্সেনিক মুক্ত? না কি শহরের মানুষ আবার বিষ জল পান করতে বাধ্য হচ্ছেন?

পুরপ্রধান তৃণমূলের রিতা দাস বলেন, “ইঞ্জিনিয়রদের তৈরি পরিকল্পনা অনুযায়ী এই প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য জলটা নদীর আরও গভীর থেকে জল সংগ্রহ করা প্রয়োজন। তার জন্য পোর্ট ট্রাস্টের অনুমতি নিতে হয়। আমরা সেই অনুমতি পাচ্ছি না।” তিনি বলেন, “প্রতি বছরই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে ধরে নিয়েই আয়রন রিমুভার মেশিন বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।” পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জলের আর্সেনিকের পরিমাণ জানতে জলের নুমনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। তবে কবে থেকে আবার ভাগীরথীর জল জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে তা নির্দিষ্ট ভাবে বলতে পারছেন না পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তত দিন ভূগর্ভস্থ জলই ভরসা কৃষ্ণনগরবাসীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE