লাচ্চা। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র।
বছরের অন্য সময়ে তাঁরা রাজমিস্ত্রি বা দিন মজুরির কাজ করেন। আর দুই ইদকে (ইদুল ফিতর ও ইদুজ্জোহা) কেন্দ্র করে মাস তিনেক লাচ্ছা-সিমুইয়ের কারখানায় কাজ করতে তাঁরা গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জনপদ তো বটেই, বর্ধমান-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তাঁরা ছড়িয়ে পড়েন। মাস তিনেকের বাড়তি আয়ে সংসারে হাসি ফোটে।
তাঁরা হলেন মুর্শিদাবাদের বর্ধমান লাগোয়া সালারের কুলুড়ি গ্রামের লাচ্চা-সিমুইয়ের ওস্তাদ কারিগর। সেই গ্রামেরই একটি দল বহরমপুরের উত্তরপাড়ার কাছে লাচ্চা-সিমুইয়ের কারখানায় কাজ করতে এসেছেন।
অনেকেই কুলুড়িকে লাচ্চা-সিমুইয়ের গ্রাম বলে ডাকেন।
উত্তরপাড়ায় ওই মরসুমি কারখানায় জনা চোদ্দ কারিগর কাজ করছেন। বড় উনুনের বড় কড়াইয়ের ঘিয়ে ভাজা হচ্ছে লাচ্চা। পরে তা ঝুড়ি বন্দি হয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে।
ময়দা থেকে হাতের কারসাজিতে কীভাবে মিহি লাচ্ছার আকার ধারণ করছে? লাচ্চা তৈরির কারিগর আলম শেখ বলছেন, ‘‘লেচি গুলিকে ক্রমে টানা হচ্ছে। নির্দিষ্ট মাপ ধরে চার পাঁচ হাত ঘুরে ময়দার লেচি টানার ফলে লাচ্চার আকার ধারণ করছে।’’ কুলুড়ির আলি হোসেন বড় কড়াইয়ে গরম ঘিয়ে লাচ্ছা ভাজতে ভাজতে বলছেন, ‘‘কারখানায় মেশিনে তৈরি লাচ্চার থেকে হাতে তৈরি এই লাচ্চার স্বাদ আলাদা পাবেন।’’
কুলুড়ির লাচ্ছা তৈরির কারিগররা জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাঁরা লাচ্ছা তৈরির কাজ করছেন। গ্রামের একে অপরের কাছ থেকে তাঁরা একাজ শিখেছেন। তাঁরা নিজেদের শিল্পীও মনে করেন।
ওই গ্রামের হাসিবুল শেখ, রাজ শেখরা বলেন, ‘‘হাতের কারসাজিতে ময়দা মিহি লাচ্চায় রূপান্তরিত হয়। তাই সঠিক মাপ না জানলে লাচ্চা করা যায় না। এ ছাড়া কেমন তেলে কত ক্ষণ ভাজতে হবে সেই তাকও জানা খুব জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy