Advertisement
E-Paper

দুই হাসপাতাল ঘুরে প্রসব মৃত ভ্রূণ

অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল সকালে। শুরু হয়ে গিয়েছিল তরল ক্ষরণ। কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার জানিয়ে দেন, শিশুটিকে বাঁচাতে গেলে মায়ের জীবন বিপন্ন হতে পারত। তাই ভ্রূণ বের করে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৫
বাড়িতে মৌমিতা। নিজস্ব চিত্র।

বাড়িতে মৌমিতা। নিজস্ব চিত্র।

অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল সকালে। শুরু হয়ে গিয়েছিল তরল ক্ষরণ। কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার জানিয়ে দেন, শিশুটিকে বাঁচাতে গেলে মায়ের জীবন বিপন্ন হতে পারত। তাই ভ্রূণ বের করে দেওয়া হয়েছে।

অথচ কয়েক দিন পরে ফের ব্যথা শুরু হলে আলট্রোসোনোগ্রাফি করে দেখা যায়, জরায়ুতে তখনও সাড়ে পাঁচ মাসের শিশুটি জীবিত রয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। সোমবার তরুণীর স্বামী জেএনএম হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

বছর বত্রিশের ওই তরুণীর নাম মৌমিতা সরকার। বাড়ি চাকদহের ঘুগিয়ায়। তাঁর একটি সাত বছরের ছেলে আছে। চাকদহ পালপাড়ায় দিদি কণিকা দাসের বাড়িতে বেড়াতে এসে গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর পেটে ব্যথা শুরু হয়। সে দিনই তাঁকে জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

কণিকার দাবি, এর দু’দিন পরে চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব নয়। তাঁরা রাজি হলে জরায়ু থেকে তাকে বের করে দেওয়া হবে। তাতে মায়ের প্রাণ বাঁচবে। চার ঘণ্টার ফারাকে দু’বার ভ্রূণ বের করার ওষুধ দেওয়া হয়। রাত ১টা নাগাদ রক্তক্ষরণ শুরু হয়। লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয় মৌমিতাকে। কিছুক্ষণ পরে জানানো হয়, ভ্রুণ বের করা হয়েছে।

সেই অভিযোগ পত্র। নিজস্ব চিত্র।

মৌমিতাকে ছুটি দেওয়া হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বাড়ি ফেরার পরে ফের তাঁর পেট ফুলে যায়। যন্ত্রণা শুরু হয়। পরের দিন এক স্থানীয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে তাঁর পেটের আলট্রোসোনোগ্রাফি করা হয়। তার রিপোর্টে দেখা যায়, পেটের মধ্যে শিশুটি তখনও বেঁচে। পরের দিন বাড়িতেই শিশুটির পা বেরিয়ে আসে।

মৌমিতার স্বামী পীযূষ জানান, তখনই তাঁকে চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তারেরা জানান, অপুষ্ট শিশুর বাঁচার সম্ভাবনা নেই। যখন তাকে বের করে আনা হয় তখন সে মারা গিয়েছে। মৌমিতা বলেন, ‘‘জেএনএম হাসপাতালে আমাকে বলা হয়েছিল, বাচ্চা পেট থেকে বের করা হয়েছে। তখন কিছু বুঝিনি। এত বড় হাসপাতালেও এমন কাণ্ড হতে পারে!’’

সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়ে পীযূষ দোষী চিকিৎসকদের শাস্তি দাবি করেছেন। জেএনএম হাসপাতাল সুপার সুবিকাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, দু’টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি দাবি করেন, ‘‘ভ্রূণ বের করা হয়েছিল বলেই মনে হয়। হয়তো ভ্রূণের কিছু অংশ রয়ে গিয়েছিল জরায়ুতে। সেটাও কাম্য নয়। তদন্ত চলছে।’’ তাঁদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বলা হয়েছিল বলেও পীযূষ তাঁর অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন। সুপার জানান, ওযুধ কিনতে যা খরচ হয়েছে, তা পীযূষকে দিয়ে দেওয়া হবে। তদন্তে কেউ দোষী বলে প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

Fetus Dead Hospitals Lady
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy