Advertisement
E-Paper

ছাঁটবে কে কাকে, অঙ্ক গোলমেলে

বিগত বেশ কয়েকটি ভোটের ফল বলছে, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে কংগ্রেস ৬-৭ শতাংশ ভোট পায়।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০১:২৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নদিয়ার কোনও কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী দেয়নি বিজেপি বা কংগ্রেস। কিন্তু তা বলে অঙ্ক কষা থেমে নেই। কেননা কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি বিজেপির জিততে হলে আগের বারের তুলনায় তাদের যতটা বাড়তে হবে, তাতে বাম ভোট কমা প্রায় অনিবার্য। কিন্তু সত্যিই কি তেমনটা হতে চলেছে?

বিগত বেশ কয়েকটি ভোটের ফল বলছে, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে কংগ্রেস ৬-৭ শতাংশ ভোট পায়। ফলে ধরে নেওয়া যেতেই পারে যে সেটা তাদের বুনিয়াদি ভোট এবং এ বারও মোটামুটি তারা ওই শতাংশেরই আশপাশে থাকবে। ফলে, বিজেপিকে বাড়তে গেলে ভোট টানতে হবে সিপিএম আর তৃণমূলের বাক্স থেকে।

২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেস মিলে পেয়েছিল প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট। তার মধ্যে কংগ্রেসের বুনিয়াদি ৬ শতাংশ ভোট বাদ দিলে দাঁড়ায় প্রায় ৩৫ শতাংশ, যা তৃণমূলের ভোট বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। ২০১৪ সালেও তারা প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট পায়। অর্থাৎ পরপর দু’টি লোকসভা ভোটে তৃণমূল তার নিজের ভোট ধরে রেখেছিল। এ বারও সেই ধারা অক্ষুণ্ণ থাকলে বাম ভোট ভাঙানো ছাড়া বিজেপির জেতার উপায় নেই।

২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে সিপিএম পেয়েছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট, পরের বার প্রায় ৬ শতাংশ কমে তা দাঁড়ায় প্রায় ২৯ শতাংশে। ২০০৯ সালে বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ১৬ শতাংশ ভোট। পরের বার তা প্রায় বেড়ে হয় ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ বিগত দু’টি ভোটে সিপিএমের ভোট ক্রমশ কমেছে আর বিজেপির ভোট বেড়েছে। সেই হিসাবে এ বারও যদি সিপিএমের ভোট কমে গিয়ে বিজেপিতে চলে যায় তবে তারা ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা-ও সম্ভবত জেতার জন্য যথেষ্ট নয়। অর্থাৎ, বিজেপিকে জিততে গেলে তৃণমূলের ভোট ভাঙানোও জরুরি হয়ে পড়বে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রশ্ন হল, তা কত দূর সম্ভব? একে তো কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটই রয়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ, যার বেশির ভাগ তাদের সঙ্গে রয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। বাকিটা রয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে। এখনও পর্যন্ত যা চিত্র, তাতে বিজেপিকে ওই ভোট বাদ দিয়েই অঙ্ক কষতে হবে। ও দিকে, সিপিএমও আগের ভোটের মূহ্যমান দশা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে। জিতুক বা না জিতুক, বামকর্মীরা আগের চেয়ে বেশি মরিয়া ও চনমনে। অনেক আগে থেকে হিসেব কষে তারা বুথস্তরে প্রচারে নেমেছে। ফলে, যে তৃণমূল-বিরোধী ভোট বিজেপির ঝুলিতে চলে গিয়েছিল তার অনেকটাই এ বার তাদের কাছে ফিরে আসবে বলে বাম নেতাদের আশা। তাঁদের মতে, জেলার সংখ্যালঘুদের একাংশও তৃণমূলের প্রতি বিরক্ত। তাঁরাও সিপিএমকে সমর্থন জানাতে পারেন।

যদিও বিজেপির দাবি, লোকসভা ভোটের অঙ্কটা অনেক বড়। নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে রাখা বা না-রাখার প্রশ্ন। ফলে লড়াইটা মূলত ‘মোদী বনাম দিদি’ হবে। সে ক্ষেত্রে, তৃণমূল-বিরোধী ভোট বামেরা নয়, তারাই পাবে। সংখ্যালঘু ভোট তারা যদি না-ও পায়, ধর্মীয় মেরুকরণের জেরেই হিন্দু ভোটের একাংশ তৃণমূল থেকে তাদের দিকে চলে আসতে পারে বলে বিজেপি নেতাদের আশা।

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সহাদেব সরকারের দাবি, “আমরা তৃণমূলের ভোটই বেশি ভাঙাব। তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি, আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যেতে দেখে বহু মানুষ ক্ষিপ্ত। তাঁরা আমাদের ভোট দেবেন।” বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, রাজ্যের শাসক দলের প্রতি ক্ষোভ ও মেরুকরণের জেরেই বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তুলনামূলক ভাল ফল করেছেন তাঁরা। লোকসভা ভোটে সেই তীব্রতা আরও বাড়বে।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের প্রতিক্রিয়া, “ওরা আগে যোগ্য প্রার্থী দিয়ে দেখাক। তার পর ভোটে জেতার খোয়াব দেখবে!”

Lok Sabha Election 2019 BJP TMC Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy