ভোট কিংবা খুন-জখম যেন ডোমকলের ললাট লিখন!
গত পুরভোট ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি বহু মানুষ। তার আগে ভোট মানেই মৃত্যু আর মৃত্যুর সঙ্গেই অনিবার্য ভাবে উঠে এসেছে ডোমকলের নাম। ভোটের বলিকে এলাকার মানুষ তুলনা টানতেন উইকেট পতনের সঙ্গে। সেই ডোমকলে রাজ্যের তৃতীয় দফার লোকসভা ভোট মিটল সুষ্ঠু ভাবে!
যদিও গন্ডগোলের সব রকম রসদ মজুদ ছিল ডোমকলে। সোমবার রাত থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে ডোমকল। ডোমকলে ভোট করতে যাওয়া কর্মীরা ‘বিভিন্ন এলাকায় মুহূর্মুহূ বোমা পড়েছে’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আপডেট স্টেটাস’ দিয়েছেন। এক ভোটকর্মী জানান, বোমার আওয়াজে মাঝে-মধ্যেই কেঁপে উঠছে এলাকা। মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্নে মিটবে বলে সংশয় ছিল। এ দিন ভোটগ্রহণ পর্বের শুরুটাও ছিল ধামাকা! তার পরে সারা দিনে অবশ্য তেমন বড় কোনও গন্ডগোল হয়নি। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন সাধারণ মানুষ থেকে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।
এক দিনের নির্বাচনে ১৪ জনের মৃত্যু, গত গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটের দিনের একমাত্র খুন হয়েছে এই ডোমকলেই! আর ভোট এলেই মুড়ি মুড়কির মতো বোমা পড়ে এখানে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর তদারকিতে লোকসভা ভোট হওয়া নিশ্চিত ছিল। বিরোধীদের দাবি মেনে জেলার অধিকাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয় কমিশন। ফলে ভোট দিতে যাওয়ার রাস্তায় বাঁশ-লাঠি হাতে যে দাঁড়ানো যাবে না, তা আগেই আঁচ করেছিলেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা।
এ ছাড়া ভোটের প্রস্তুতিতে খামতি ছিল বলে মনে করেন শাসক দলের নেতারা। তার বড় কারণ দলীয় কোন্দল। নিজেদের অন্তর্কলহ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, দলকে এক সুতোয় বাঁধতে পারেনি দলের শীর্ষ নেতারাও।
ডোমকলের এক বাসিন্দার দাবি, পুরসভা বা পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূল ছিল এককাট্টা। কিন্তু পঞ্চায়েত গঠনের সময় থেকে দলের অন্দরে দেখা দেয় কলহ। এমনকি একে অপরের বিরুদ্ধে পথে নেমে মিছিল মিটিংও করে। আর তার পর থেকে দলের রাশ আলগা হতে থাকে একটু একটু করে।