অতন্দ্র: কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল। শনিবার চাঁদড়ায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ
লড়াইয়ের অন্তিম লগ্ন সমাগত। স্নায়ু টানটান যুযুধান পক্ষের। আর চব্বিশ ঘণ্টাও নেই যুদ্ধের। তার পরেই নির্ধারিত হবে কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। দিন-রাত এক করে ফেলা প্রচারের শেষ ছিল শনিবার।
কথায় বলে সব ভাল যার শেষ ভাল। ভোট প্রচারে যার যতটুকু খামতি ছিল তা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে সব দল। রোড শো, বাইক বা হুডখোলা জিপে প্রচার, তারকা সমাগম, ফুটবল খেলা—কিছুই বাদ যায়নি। কী হয় বা কী হতে পারে তা নিয়ে দুই লোকসভা কেন্দ্রেই মধ্যবিত্তের চায়ের টেবিল তোলপাড় হয়েছে। গুঞ্জন, ফিসফাস, চাপা হাওয়া, মাপা হিসেব চলেছে। এমন গলি বা রাস্তা পাওয়া ভার যেখানে একের পর এক মিছিল-স্লোগান শোনা যায়নি।
শনিবার সকালে রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার চাকদহে বনগাঁ রোডে নিজে কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে রোড শো করেন। বালিয়া বাজার থেকে শুরু হয়ে চাকদহ শহর, পালপাড়া হয়ে চাকদহ চৌমাথায় তা শেষ হয়। পরে শান্তিপুরে থানার মোড় থেকে গোডাউন মাঠ পর্যন্ত রোড শো করেন বিজেপি প্রার্থী। দুই জায়গায় সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রী দেবিকা।
এ দিনই রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের সমর্থনে রোড শো করে তৃণমূল। সকাল দশটা নাগাদ চাকদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে হুডখোলা জিপে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী গৌতম দেব, মন্ত্রী রত্না ঘোষ, সাংসদ তাপস মণ্ডল, বিধায়ক শংকর সিংহ, অভিনেত্রী শুভশ্রী সহ বাকিরা যাত্রা শুরু করেন। এ দিন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে, বাঁচার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, মানুষ তাদের ভোট দেবে না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সব জায়গায় আমদের প্রার্থীরা জিতছে। নানা ধরনের কারচুপির চেষ্টা চলছে।”
শেষ দিনের প্রচারে রানাঘাটের সিপিএম প্রার্থী রমা বিশ্বাস জোর দিয়েছেন বাড়ি বাড়ি ঘুরে জনসংযোগে। এ দিন সকালে তিনি শান্তিপুর, নবদ্বীপ, রানাঘাটের কিছু জায়গা ঘুরে প্রচার করেন। পরে বিকেলের দিকে তাহেরপুরে সভায় যোগ দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ।
তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে বিজেপি নেতা মহাদেব সরকারর প্রচারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এ দিন তিনি সকালে বাড়ি থেকে বের হননি। তবে মহাদেব সরকার না পারলেও কৃষ্ণনগরের প্রার্থী কল্যাণ চৌবে এ দিন ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন এলাকা। সকালে কৃষ্ণনগরের মাঠে কিছু সময় ফুটবল খেলেন। পরে চলে যান কালীগঞ্জের জুরানপুর। সেখান থেকে পলাশিপাড়া, তেহট্ট হয়ে আসেন কৃষ্ণনগরে। সিপিএম প্রার্থী শান্তনু ঝা এ দিন সকালে কালীগঞ্জের মোলান্দি এলাকায় জেলা নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রায় ৭ কিমি পদযাত্রা করেন। দুপুরে ধুবুলিয়ার রুকুনপুরে পদযাত্রা করেন।
শেষ দিনে একটু অন্য রকম ভাবে প্রচার সারেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। দ্বিজেন্দ্রলাল মঞ্চে তিনি নতুন প্রজন্মের ভোটারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে শহরে দীর্ঘ বাইক মিছিল করেন।
তবে প্রচারের শেষ দিনে একটি মিটিং ছাড়া বিশ্রামের মধ্যে কাটান কংগ্রেস প্রার্থী ইনতাজ আলি শাহ।
সূর্যের তেজ উপেক্ষা করে অন্তিম প্রহরে কম-বেশি ঘাম ঝরালেন সব প্রার্থীই। এখন বাকিটা— ‘ফলেন পরিচীয়তে’!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy