Advertisement
১৪ অক্টোবর ২০২৪

উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত স্কুল, স্বস্তি পড়ুয়াদের

কাছেপিঠে স্কুল বলতে প্রায় ন’কিলোমিটার দূরে আনুলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কিংবা ১০-১১ কিলোমিটার দূরে রানাঘাটের দেবনাথ ইন্সটিটিউশন। রাস্তা কোথাও পাকা, কোথাও কাঁচা। দিনের পর দিন সেই রাস্তা ঠেঙিয়ে রোদে-জলে, ঘেমে-নেয়ে পড়ুয়াদের ছুটতে হত অত দূরের স্কুলগুলোতে উচ্চ মাধ্যমিকের পড়া পড়তে। পড়ার ক্লান্তির চেয়ে পথের ক্লান্তিই বেশি চেপে ধরত তাদের।

সৌমিত্র সিকদার
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০২:০০
Share: Save:

কাছেপিঠে স্কুল বলতে প্রায় ন’কিলোমিটার দূরে আনুলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কিংবা ১০-১১ কিলোমিটার দূরে রানাঘাটের দেবনাথ ইন্সটিটিউশন। রাস্তা কোথাও পাকা, কোথাও কাঁচা। দিনের পর দিন সেই রাস্তা ঠেঙিয়ে রোদে-জলে, ঘেমে-নেয়ে পড়ুয়াদের ছুটতে হত অত দূরের স্কুলগুলোতে উচ্চ মাধ্যমিকের পড়া পড়তে। পড়ার ক্লান্তির চেয়ে পথের ক্লান্তিই বেশি চেপে ধরত তাদের।
স্কুলের পাশাপাশি অভিভাবক, পড়ুয়াদের তাই দাবি ছিল স্থানীয় স্কুলটিকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা হোক। কয়েক বছরের প্রতীক্ষার পর এ বছর তাঁদের সেই দাবি মান্যতা পেল। চলতি মাসের ১৬ তারিখে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত হল রানাঘাটের ওয়েস্ট শম্ভুপুর নেতাজি বিদ্যানিকেতন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া। গ্রীষ্মের ছুটি থাকলেও ভর্তির কথা মাথায় রেখে প্রতিদিনই খোলা থাকছে অফিস। আপাতত ওই বিদ্যালয়ে কলা বিভাগই চালু হয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট শহর থেকে কমপক্ষে দশ কিলোমিটার দূরে রানাঘাট-১ নম্বর ব্লকের আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাবণবোড়ে ১৯৬৮ সালে এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী মানুষের চেষ্টায় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দান করা জমির উপরে ওই বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। এত দিন ওই স্কুল পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হত। সব মিলিয়ে পড়ুয়াদের সংখ্যা ৩১৮ জন। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ৩৮ জন। তাদের মধ্যে পাশ করেছে ২৮ জন। তাদেরই ২৬ জন ওই স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে।

সদ্য মাধ্যমিক পাশ করা বর্ষা বিশ্বাস বলে, ‘‘এর আগে মাধ্যমিক পাশ করে ৯-১০ কিলোমিটার দূরে একাদশ শ্রেণিতে পড়তে যেতে হয়েছে ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। সাইকেল ছাড়া ওই সব স্কুলে যাওয়ার অন্য কোনও উপায়ও ছিল না। আবার সাইকেল চেপে যেতে গেলেও খুব অসুবিধায় পড়তে হত। এখন আর সেই সমস্যা রইল না।’’ আরও এক পড়ুয়া সুমিতা বিশ্বাস বলে, ‘‘আমাদের স্কুলে এখন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ানো হবে ভেবে খুব ভাল লাগছে। অত দূরের স্কুলগুলোতে উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে যাওয়ার আর কোনও হ্যাপা রইল না।’’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকা ঝর্না পাল (বিশ্বাস) বলেন, ‘‘এই বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হওয়ায় শুধুমাত্র আমদের বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরই সুবিধা হবে না। আশপাশের আরও কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, তাদের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে। বিশেষ করে ছাত্রীরা অনেক বেশি উপকৃত হবে।’’

রানাঘাট-২ নম্বর সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মোতাহারুন নেছা বলেন, ‘‘কোনও বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হলে সেই এলাকার পড়ুয়াদের সুবিধে হয়। প্রত্যন্ত গ্রামের ওই বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেটা আরও বেশি করে সত্যি। যত দূর জানি ,ওই রাস্তায় ট্রেকার ছাড়া অন্য কোনও যানবাহন চলে না। ওখানে গরিব মানুষের সংখ্যাও বেশি। এর ফলে পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও উপকৃত হবেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE