পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী নিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর যে মন্তব্য করেছিলেন, তার প্রতিবাদে বিবৃতি জারি করল ইসলামাবাদ। পাক বিদেশ দফতর থেকে রবিবার ওই বিবৃতি জারি করা হয়েছে এবং জয়শঙ্করের মন্তব্যকে ‘উস্কানিমূলক, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গত মে মাসের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং দুই দেশের সংঘর্ষের প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়েছে পাক বিবৃতিতে।
পাক বিদেশ দফতরের মুখপাত্র তাহির আন্দ্রাবির দাবি, পাকিস্তান একটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল রাষ্ট্র। সামরিক-সহ তাদের সমস্ত প্রতিষ্ঠান দেশের এক-একটি স্তম্ভ। পাকিস্তানের নিরাপত্তা, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য তারা দায়বদ্ধ। এর পরেই মে মাসের সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে বিদেশ দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কতটা পেশাদার, মাতৃভূমির প্রতি তারা কতটা দায়বদ্ধ, ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি জনগণের প্রতি তারা কতটা নিবেদিতপ্রাণ, তা ওই সংঘর্ষের সময়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই সত্যকে কোনও ভাবেই মুছে দেওয়া যাবে না।’’
আরও পড়ুন:
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কাঠগড়ায় তুলছে ভারতীয় নেতৃত্ব, দাবি ইসলামাবাদের। তাদের বক্তব্য, অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে জনগণের নজর ঘোরাতে এই ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে। তা ছাড়া, পাকিস্তানের মাটিতেও ভারত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে ইন্ধন দেয় বলে অভিযোগ করেছে ইসলামাবাদের বিদেশ দফতর। দাবি, সে দিক থেকেও আন্তর্জাতিক মহলের নজর ঘোরাতে চাইছে নয়াদিল্লি। বলা হয়েছে, ‘‘এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য আঞ্চলিক সৌহার্দ্য, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি ভারতের অবহেলাকেই প্রকট করে।’’ পাকিস্তানের দাবি, ভারতের অন্দরে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় আগ্রাসন চলছে। তা মোকাবিলায় ভারত সরকারকে মনোনিবেশের পরামর্শও দিয়েছেন পাক মুখপাত্র।
কী বলেছিলেন জয়শঙ্কর?
শনিবার একটি অনুষ্ঠান থেকে জয়শঙ্কর জানান, ভারতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত যত সমস্যা রয়েছে, তার অধিকাংশের জন্য দায়ী পাকিস্তান এবং তাদের সামরিক প্রতিষ্ঠান। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে গোপনে সমর্থন ও সাহায্য করে। তার ফলে ভারতের নিরাপত্তা সঙ্কটের মুখে পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ যেমন ভাল জঙ্গি এবং খারাপ জঙ্গির মধ্যে পার্থক্য করেন, তেমনই ভাল সামরিক নেতা এবং খারাপ সামরিক নেতাদের মধ্যেও পার্থক্য করা দরকার।’’