Advertisement
E-Paper

সরকারি বাড়ি মিলবে কবে, অপেক্ষায় খুদেরা

সরকারি হিসেব বলছে, মুর্শিদাবাদের প্রায় ৫০ শতাংশ কেন্দ্রের নিজস্ব সরকারি বাড়ি নেই। নদিয়াতেও প্রায় ৭০ শতাংশের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব বাড়ি নেই।

সুজাউদ্দিন ও সৌমিত্র সিকদার

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১১
পরিত্যক্ত বাড়িতে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ইসলামপুরে। —নিজস্ব চিত্র

পরিত্যক্ত বাড়িতে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ইসলামপুরে। —নিজস্ব চিত্র

সরকারের নিজস্ব বাড়ি না-থাকাটাই কাল হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালানোর জন্য ভাড়া বাড়ি, ক্লাবের উপর ভরসা করতে গিয়ে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বহু জায়গায় কেন্দ্র চালাতে হচ্ছে এক চিলতে জায়গায়। অনেক ক্ষেত্রেই সেটা এক ফালি বারান্দা, ছোট্ট ক্লাবঘর বা এক চিলতে উঠোন। কোথাও আবার সরকারি খাতায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাড়ির ঠিকানা থাকলেও আদতে সেটা গাছতলা। যদিও সে কথা সরকারি কর্তারা স্বীকার করেন না।

সরকারি হিসেব বলছে, মুর্শিদাবাদের প্রায় ৫০ শতাংশ কেন্দ্রের নিজস্ব সরকারি বাড়ি নেই। নদিয়াতেও প্রায় ৭০ শতাংশের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব বাড়ি নেই। প্রশাসনিক কর্তারাই জানাচ্ছেন, ভাড়ার বাড়িতে অনেক জায়গায় যখন-তখন বাড়ির মালিক জায়গা পুনর্দখল করে নেন, অনেক ক্ষেত্রে আবার যতটুকু জায়গা মেলে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম হয়। সেই জায়গায় সংস্কারও হয় না। অনেক বাড়িওয়ালা অহরহ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে ভাড়া দেওয়া জায়গা বিয়ে বা কোনও অনুষ্ঠানে ভাড়া দিয়ে দেন বেশ কয়েক দিনের জন্য। তখন ছোট ছেলেমেয়েদের আশপাশে বনবাদারে গিয়ে ক্লাস করতে হয়, খাবার খেতে হয়।

সরকার কবে এখানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন গড়বে এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “কয়েক মাস আগেও জেলায় মাত্র ৩৭০০ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব বাড়ি ছিল। চলতি বছর আরও ১৫০০ বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার মধ্যে ৫০০ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নির্মাণ করে মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে উদ্বোধনও করানো হয়েছে। বাকি ১০০০টি বাড়ির নির্মাণ কাজ চলছে।” নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তের কথায়, “এই মুহূর্তে জেলায় ৫০০ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নির্মাণ-কাজ চলছে।’’ নদিয়ায় ৬৬২০টি অঙ্গনওয়াড়ির মধ্যে মাত্র ২০১৭টি সরকারের নিজস্ব বাড়িতে চলে। জেলায় ৪ লক্ষ ১২ হাজার শিশু ও প্রায় ৭৭ হাজার গর্ভবতী ওই কেন্দ্রে আসেন। মুর্শিদাবাদে প্রায় ৬ লক্ষ খুদে ও ১ লক্ষ ৩০ হাজার গর্ভবতী মা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যান।

ইসলামপুর এলাকার এসেরপাড়া গ্রামে এক পরিত্যক্ত বাড়িতে চলে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। যে কোনও সময় ছাদ ভেঙে পড়তে পারে ওই বড়ির। বৃষ্টি হলেই জল ঢোকে ভাঙা অংশ দিয়ে। ডোমকলের শ্যামপুর গ্রামে ২টি কেন্দ্রের কোনও বাড়ি নেই। গাছতলাই সম্বল। বৃষ্টি নামলে পাশের বাড়ির খোলা বারান্দায় শিশুদের গুটিসুটি হয়ে বসে থাকতে হয়।শ্যামপুরের আরও একটি কেন্দ্র তৈরী হয়েছিল ১৯৮২ সালে। আজও তার ঘর মেলেনি।

গাংনাপুর থানার বৈদ্যপুর কর্মকারপাড়ার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ১৯৯১ সাল থেকে একফালি বারান্দায় চলছে। হাজরাপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরও কোনও নিজস্ব ঘর নেই। ২০০৯ সাল থেকে তা চলছে এক ভাড়াবাড়ির বারান্দায়। পড়ুয়া কমতে-কমতে ৭ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯১ সাল থেকে চলছে দক্ষিণ খাসপুর অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র। পড়ুয়ার সংখ্যা ৪১ জন। শিক্ষিকা উর্মিলা দাস বলেন, “আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝে ক্লাস করতে হয়। এই বর্ষা আসছে আর আমাদের চিন্তা বাড়ছে।’’

(তথ্য সহায়তা—সামসুদ্দিন বিশ্বাস)

Anganwadi Centre Ranaghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy