Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

চোখের সামনে নদীগর্ভে তলিয়ে গেল বাড়িটা

খুব পরিচিত শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল পূর্ণচন্দ্র তরফদারের। উঠে বসতে কানে আসে ঝুপঝুপ শব্দ। চকিতে বিছানা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ফালি চাঁদের আলোয় দেখেন, ঘরের কানাচে ঢেউ মারছে নদী। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাড়ির সকলকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। খানিক পরে তলিয়ে গেল বাড়িটা!

চাকদহে গঙ্গার ভাঙন। — নিজস্ব চিত্র।

চাকদহে গঙ্গার ভাঙন। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাকদহ শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০০:০৩
Share: Save:

খুব পরিচিত শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল পূর্ণচন্দ্র তরফদারের। উঠে বসতে কানে আসে ঝুপঝুপ শব্দ। চকিতে বিছানা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ফালি চাঁদের আলোয় দেখেন, ঘরের কানাচে ঢেউ মারছে নদী। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাড়ির সকলকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। খানিক পরে তলিয়ে গেল বাড়িটা!

গত দু’দিন থেকে চেনা নদীটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল। মাঝে মাঝে গর্জন জানান দিচ্ছিল বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তবে, এত তাড়াতাড়ি সে এই কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে বুঝে উঠতে পারেননি চাকদহের পোড়াডাঙা গৌরনগরঘাট এলাকার ছাপোষা মানুষগুলো। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগীরথীর গ্রাসে ছ’টি ঘর তলিয়ে গিয়েছে। তলিয়ে গিয়েছে বেশ কিছু চাষের জমিও। সঙ্গে গাছপালা। বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে আরও কয়েকটি পরিবার। তাদের মধ্যে ৯টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন চাকদহের বিডিও নীশিথ ভাস্কর পাল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হরপ্রসাদ হালদার-সহ অন্যান্যেরা। বিডিও নীশিথবাবু বলেন, “ভাঙন দুর্গত মানুষদের জন্য ত্রিপল এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছ। রাস্তার ধারে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় নজর রাখা হচ্ছে।” প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকদহের চান্দুরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পোড়াডাঙ্গা গৌরনগর এলাকায় ভাঙন কয়েক দিন ধরেই নদীপাড় ভাঙছিল। হঠাৎ করে বড়সড় ভাঙনে ঘড়ছাড়া কৃষিমজুর, ভ্যান চালক, দিনমজুর মানুষগুলো।

পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তীব্রজ্যোতি দাস বলেন, “আরও ক্ষতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে দুর্গতদের জন্য ত্রাণের দাবিও জানিয়েছি।” চাকদহ শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পোড়াডাঙ্গা গৌরনগর গ্রাম। মঙ্গলবার রাত একটা নাগাদ শুরু হয় ভাঙন। সময় মতো বুঝতে পারায় রক্ষা পান রতন হাজরা ও মানিক বিশ্বাস। তাঁরা বলেন, “শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। কোনও রকমে রক্ষা পাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Erosion Ganges Chakdaha Homeless
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE