Advertisement
E-Paper

সীমান্তে উত্তেজনা! জামাইষষ্ঠীতে চর মেঘনার শ্বশুরবাড়িতে যেতে নারাজ এ পার বাংলার জামাইয়েরা

প্রতি বারের মতো এ বারের চর মেঘনার জামাইষষ্ঠী নিয়ে উন্মাদনায় যেন কিছুটা ভাটাই পড়েছে। সীমান্ত উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে জামাইষষ্ঠীতে। অনেক জামাই চর মেঘনায় শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইছেন না, তা নিয়ে আক্ষেপ শ্বশুর-শাশুড়িদের।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ২৩:২৫
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি যেতে গেলে সঙ্গে রাখতে হবে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড। মাছ, মিষ্টি, উপহারের সঙ্গে যদি এই দু’টি জিনিস সঙ্গে না থাকে, তবে বিপদে পড়তে হয় নদিয়ার করিমপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের চর মেঘনার জামাইদের! আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডে গরমিল থাকলে তো আরও বিপদ। মাঝপথ থেকেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে, এমন জামাইয়ের সংখ্যাও কম নয়। এ বারের জামাইষষ্ঠীর অনেক আগে থেকেই শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন এ পার বাংলার জামাইয়েরা। কিন্তু প্রতি বারের মতো এ বারের চর মেঘনার জামাইষষ্ঠী নিয়ে উন্মাদনায় যেন কিছুটা ভাটাই পড়েছে। সীমান্ত উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে জামাইষষ্ঠীতে। অনেক জামাই চর মেঘনায় শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইছেন না, তা নিয়ে আক্ষেপ শ্বশুর-শাশুড়িদের।

চর মেঘনার মেয়ে রুমা মাহাতোর বিয়ে হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের এক বাসিন্দার সঙ্গে। প্রতি বছর জামাইষষ্ঠীতে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাপের বাড়ি আসা চাই! কিন্তু এ বারে রাজি হচ্ছেন না স্বামী। শ্বশুর-শাশুড়ির আমন্ত্রণও ভোলাতে পারছে না জামাইয়ের মন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক বছর যাই। গত বছর আধার কার্ডের নাম সংশোধন করতে এক হাজার টাকা বাড়তি দিয়েছিলাম শুধু শ্বশুরবাড়ি যাব বলে। কিন্তু সীমান্তে উত্তেজনার কারণে এ বছর মন সাড়া দিচ্ছে না।’’

চর মেঘনার অন্য জামাই হুগলির বাসিন্দা তরুণ বিশ্বাসের গলাতেও একই স্বর। তিনি বলছেন, “প্রতি বছর কাঁটাতারের গেটের কাছে গিয়ে আধার-ভোটার কার্ড দেখিয়ে সীমান্তের গেট পার হই। শ্বশুরবাড়ি থেকে লোকজন এসে বিএসএফকে বলে নিয়ে যায়। ব্যাপারটা বেশ রোমাঞ্চকর লাগে। কিন্তু এ বছর যে ভাবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে তাই আর সীমান্তের কাঁটাতারের ও পারে যেতে ভরসা পাচ্ছি না।’’ জামাইয়েরা আসতে রাজি না হওয়ায় মন খারাপ চর মেঘনার অনেক বাড়িতেই। সেখানকার বাসিন্দা দুর্গা মাহাতোর কথায়, ‘‘দুই মেয়ের বিয়ে হওয়ার পর থেকে শুধুমাত্র জামাইষষ্ঠীতেই ওরা আসে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের গন্ডগোলের জন্য জামাইরা এ বার আসতে চাইছে না। কথাটা ভাবলেই বার বার চোখে জল আসছে। আবার এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।’’

নদিয়ার হোগলবেড়িয়া থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১২০ নম্বর কাঁটাতারের গেট পেরোলে চর মেঘনা। বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ১২০ নম্বর গেট থেকে দেড় কিলোমিটার উজিয়ে গেলে পড়বে গ্রাম। পশ্চিমে কাঁটাতারের বেড়া আর পূর্ব দিকে সীমান্ত বরাবর মাথাভাঙা নদী। পরিচয়পত্র জমা দিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) অনুমতি নিয়ে তবেই মেলে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার অনুমতি। তবে শুধু গেলেই হবে না, ফিরছেন কবে, সেটাও স্পষ্ট করে জানাতে হবে বিএসএফকে। তার পরেও রয়েছে নিয়মের নানা ‘বিধি’। সচিত্র পরিচয়পত্রের ছবির সঙ্গে মুখের একটু অমিল খুঁজে পেলেই আটকে দেওয়া হয় জামাইদের। সোজা খবর যায় শ্বশুরবাড়িতে। তার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে জামাইয়ের পরিচয় নিশ্চিত করলে তবেই গ্রামে ‘এন্ট্রি’ মেলে জামাইবাবাজির। তবে এ বারে ছবি কিছুটা আলাদা। চর মেঘনার অনেক বাড়িতে ধুলো পড়বে না জামাইয়ের।

India Bangladesh Border Nadia Char Meghna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy