Advertisement
E-Paper

ফিরে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু পরিযায়ীদের 

নবগ্রামের ফারুক হোসেনের বয়স মেরেকেটে বাইশ। রাজমিস্ত্রির কাজে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন বছর কয়েক আগেই।

বিদ্যুৎ মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৪:২১
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ঘরে ফিরেও আবার ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন তাঁরা।

লকডাউন এখনও বহাল রয়েছে। স্বাভাবিক হয়নি ট্রেন চলাচল, পথে নামেনি বাস। তবু, ভিন রাজ্য থেকে গ্রামে ফিরে আয়ের কোনও স্পষ্ট দিশা দেখতে না পেয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের সিংহভাগই আবার ফিরে যেতে চাইছেন প্রবাসে, ঙিন রাজ্যে তাঁদের পুরনো কর্মস্থলে।

নবগ্রামের ফারুক হোসেনের বয়স মেরেকেটে বাইশ। রাজমিস্ত্রির কাজে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন বছর কয়েক আগেই। বলছেন, “জমানো টাকাকড়ি ফুরিয়ে আসছিল বলেই ফিরে এসেছি। আমাদের কী আর ঘরের মায়া করলে চলে, ফিরে যেতেই হবে!’’ বালি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের নির্মাণ শ্রমিক রুহুল আমিনও অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে গ্রামে ফিরেছিলেন। কিন্তু বাড়িতে দিন আনি দিন খাই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ভিন রাজ্যই যে ফের তাঁর গন্তব্য হতে চলেছে কবুল করছেন তিনিও। বলছেন, ‘‘গ্রামে থেকে তো ওই আয় করতে পারব না। অন্ন জোগাড় করতে সেই মুম্বই-ই ভরসা। ট্রেন চলাচল শুরু হলেই পাড়ি দেব।’’

গুজরাত-মুম্বই-দিল্লি-কেরল, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ওঁরা কেউ জরির কাজ করেন, কেউ বা রাজমিস্ত্রি। কেউ জড়িয়ে আছেন সোনার কারিগরের সাগরেদ হিসেবে কেউ বা নিতান্তই দিনমজুর। নওদার বাসিন্দা জিয়ারুল হক মণ্ডল বলেন, “আমরা কেরলে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতাম। দিনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা রোজগার করতাম। জোগাড়ের কাজ করলেও সাড়ে তিনশো টাকা আয় ছিল। এখানে সে টাকা পাব কোথায়!’’

একই কথা শোনালেন ফরাক্কার সোনার কারিগর সইদুল শেখ, “ভিন রাজ্যে আমরা যে কাজটা করি সেই কাজ যদি রাজ্যে বসে করতাম, তা হলে এর অর্ধেক আয়ও হত না। লকডাউন পুরোপুরি উঠে গেলে তাই আবার ফিরে যাব মুম্বই।”

তাঁদের ভিন প্রদেশে ফিরে যাওযার এই কারণগুলো মেনে নিচ্ছেন মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। নওদার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা ভূমি কর্মাধ্যক্ষ জইদুল শেখ বলেন, “এখানে কাজ করে পরিযায়ী শ্রমিকেরা যা আয় করেন তার থেকে বেশি আয় করতে ভিন রাজ্যে গেলে ওঁদের কে আটকাবে, কেনই বা আটকাবে?” বেলডাঙা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নুর আলম শেখের কথায়, “সরকার নিশ্চয় তাঁদের জন্য ভাববেন। কিন্তু আয়ের মাপকাঠি বেঁধে দেব কী করে। ওঁরা ফিরতে চাইলে বেঁধে রাখবই বা কোন ভরসায়!’’ মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর অবশ্য বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অবশ্যই তাঁরা তাঁদের কাজের জায়গায়, ভিন রাজ্যে ফিরে যাবেন। এটা তাঁর অধিকার। কিন্তু এই জরুরি সময়ে যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের একশো দিনের কাজের ব্যবস্থা হয়েছে। সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ যাতে সেই কাজ পান সে জন্য শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।”

migrant work berhampor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy