অশান্ত ইরাকে স্বামীরা নিখোঁজ। দীর্ঘ দিন তাঁদের কোনও খবর মেলেনি। রাজ্য প্রশাসনের কাছে বারবার গিয়েও লাভ হয়নি। তাই এ বার প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাতে চান খোকন সিকদারের স্ত্রী নমিতাদেবী ও চাপড়ার সমর টিকাদারের স্ত্রী দীপালিদেবী। তেহট্টের এই দুই বধূ সোমবার বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সঙ্গে দেখা করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। রাহুল আশ্বাস দেন, তাঁদের স্বামীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যা যা প্রয়োজন তিনি করবেন।
সোমবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরের কাছে হাঁসাডাঙায় দলীয় সংগঠনের কাজে এসেছিলেন রাহুল। সেখানেই নমিতাদেবী ও দীপালিদেবী তাঁর সঙ্গে দেখা করে স্বামীকে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে বলেন। নিখোঁজদের ইরাকে যাওয়ার নথিপত্রের ফটোকপি রাহুলের হাতে তুলে দেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা কলকাতায় বিজেপি দফতরেও এসেছিলেন। তবে তখন রাহুলের দেখা পাননি।
সাড়ে তিন বছর আগে কাঠের কাজ করতে ইরাকের মসুল শহরে গিয়েছিলেন তেহট্টের ইলসামারির বাসিন্দা খোকন। গত ১৩ জুন সন্ধ্যায় ফোন করে তিনি জানান, জঙ্গিরা তাঁদের অপহরণ করেছে। এরপর বেশ কয়েকবার ফোনে কথা হয়। শেষ বার ১৫ জুন। নমিতাদেবী বলেন, ‘‘ওই দিনের পর থেকে কোনও ভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না। সামান্য খবরটুকুও মিলছে না। তাই রাহুলবাবুর কাছে এসেছি। তিনি যদি কোনও ব্যবস্থা করতে পারেন।’’
নমিতাদেবীর মতোই উদ্বেগে রয়েছেন চাপড়ার মহখোলার বাসিন্দা নিখোঁজ সমরবাবুর স্ত্রী দীপালিদেবী। তিনি দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন বাপের বাড়িতে আছেন। গণ্ডগোলের সময় এক রবিবার ফোন করে সমরবাবু তাঁকে জানিয়েছিলেন, কারা যেন তুলে নিয়ে গিয়েছে। তারপর দু’-এক দিন ফোন বেজে গেলেও কেউ ধরেনি। একদিন ফোনটাও বন্ধ হয়ে যায়। আর কোনও খবর নেই। রাহুল আশ্বস্ত করেন দু’জনকেই। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের প্রতি মানুষের বিশ্বাস নেই, আস্থা নেই। এই মহিলাদের জন্য সরকার কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। আমরা দলীয় ভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাব, যত দূর যাওয়া যায় যাব।’’
এ দিন রাহুল কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন নদিয়া, বর্ধমান পূর্ব ও মুর্শিদাবাদ দক্ষিণের ব্লক ও জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করতে। হাঁসাডাঙায় ওই বৈঠকে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে নানা নির্দেশ দেন রাহুল। সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল বলেন, ‘‘আমরা বুথ পর্যায়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি ‘ডাবল ওয়ে ট্রাফিক সিস্টেম’-এর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছতে চাই। আমাদের দলের কথা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাক, আর মানুষের কথা দলের কাছে। ‘মিশন ২০১৬’-কে সফল করতে নিচু স্তরের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’’ পঞ্চায়েত স্তরে চরম অব্যবস্থা চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। একশো দিনের কাজ ও বিপিএল তালিকা নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘বিপিএল তালিকাও একশো দিনের কাজের তালিকা খতিয়ে দেখা হোক। কাজের নামে লুঠ চলছে। যাঁদের কাজ পাওয়ার কথা তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। বিজেপি-র লোকরা তো কাজ পাচ্ছেনই না, তৃণমূলের লোকও কাজ পাচ্ছে না। আমরা চাই একশো দিনের কাজ নিয়ে তদন্ত হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy