প্রতীকী ছবি
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুলাই মাসের গোড়ায় বাকি পরীক্ষাগুলি নেওয়া হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। যার মধ্যে অন্যতম হল পরীক্ষার্থীদের একে অপরের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে পরীক্ষার্থীদের আসন পুনর্বিন্যাস করতে গিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট ১৭টি পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন হচ্ছে। এগুলি উপ-পরীক্ষাকেন্দ্র হবে। সেই প্রস্তাব উচ্চমাধ্যমিক সংসদকে পাঠানো হবে বলে জানান মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। চলতি মাসের ১৯ তারিখ পাঁচটি মহকুমার উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সেই মহকুমার জেলা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও মহকুমা বিদ্যালয় পরিদর্শকের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান জেলা উপদেষ্টা কমিটি (উচ্চ মাধ্যমিক) যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মহম্মদ ফুরকান।
ওই কমিটির সদস্যরা জানান প্রত্যেক বেঞ্চে দু’জন করে ছাত্র বসিয়ে ও বেঞ্চ প্রতি ন্যূনতম এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে আসন বিন্যাস করতে গেলে ঘরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আগের হিসাব অনুযায়ী একটি বিদ্যালয়ে যত সংখ্যক পড়ুয়া বসার ব্যবস্থা ছিল স্বাভাবিক ভাবেই সেই সংখ্যাটা কমে যায়। ফুরকান বলেন, “কাউন্সিল ও শিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্ত মতো পরীক্ষার্থীদের আসন পুনর্বিন্যাস করতে গিয়ে জেলার পাঁচটি মহকুমার মধ্যে বহরমপুরে ১০টি, জঙ্গিপুরে ছ’টি এবং কান্দিতে একটি নতুন কেন্দ্র-সহ মোট ১৩৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রস্তাব কাউন্সিলকে পাঠানো হবে।” লালবাগ আর ডোমকলে নতুন উপকেন্দ্র বাড়েনি বলে জানান তিনি। এর আগে জেলায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রের মোট সংখ্যা ছিল ১১৭টি। তার মধ্যে মূল ছিল ৬৮টি আর ৪৯টি উপকেন্দ্র ছিল।
পাশাপাশি ওই দিনের বৈঠকে কাউন্সিল ও শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মতো পরীক্ষাগ্রহণের জন্য করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষার্থী ও পরিদর্শকদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ও হাত স্যানিটাইজ় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফুরকান বলেন, “দুঃস্থ বা অসহায় পরীক্ষার্থী যারা মাস্ক পরে আসতে পারবেন না তাদের জন্য জরুরিকালীন ভিত্তিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে মাস্কের ব্যবস্থা রাখবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটি।” একজন সরকারি আধিকারিক, ব্লকের বিএমওএইচ, থানার আইসি বা ওসি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাড়াও যে সব বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসবেন সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা থাকবেন ওই কেন্দ্রীয় কমিটিতে। কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মত জুলাই মাসের দুই, ছয় ও আট তারিখে উচ্চমাধ্যমিকের বাকি পরীক্ষা হওয়ার কথা।
এ বছর জেলায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মোট সংখ্যা ৫৬৮০৪ জন। যাদের মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ২৩৯৯৬ জন যা মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যার ৪২.২৪ শতাংশ এবং ছাত্রী সংখ্যা ৩২৮০৮ জন যা মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যার ৫৭.৭৬ শতাংশ।
আগের মোট ১১৭টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ১১টি বিদ্যালয়কে কিছু দিন আগে জেলার বেশ কিছু বিদ্যালয়কে হোম কোয়রান্টিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, “পরীক্ষার আগে সেই বিদ্যালয়গুলোকে স্যানিটাইজ় করা হবে।” মিডডে মিল দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়গুলো খোলা হলেও সব ঘর প্রয়োজন না হওয়ায় তিন মাস বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ঘরগুলি বন্ধ অবস্থায় আছে।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “যদি কোনও ঘর এক মাস বন্ধ থাকে তা হলে স্বাভাবিক ভাবেই তা ডেটল ফিনাইল দিয়ে তা পরিষ্কার করতে হয়। তবে একদিন পরীক্ষার পরে ওই ঘর পরের পরীক্ষার আগে স্যানিটাইজ় করা উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy