Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শিশুকে খুনে গ্রেফতার মা

শুক্রবার রাতে ঝর্ণা সর্দার নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বাড়ি হাঁসখালির গাজনা সর্দারপাড়া এলাকায়।

পুলিশি হেফাজতে মা। নিজস্ব চিত্র

পুলিশি হেফাজতে মা। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার
হাঁসখালি  শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০২:১০
Share: Save:

দেড় বছরের ছেলেকে কেরোসিন খাইয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে ঝর্ণা সর্দার নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বাড়ি হাঁসখালির গাজনা সর্দারপাড়া এলাকায়।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, দেড় বছরের ছেলেকে নিয়ে দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর সঙ্গে বেশ কিছু দিন থেকেই অশান্তি চলছিল ওই মহিলার। সেই কারণেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “খুনের অভিযোগে তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

জেরায় ঝর্ণা পুলিশকে জানিয়েছে, এ দিন সকালে সে ছেলেকে কেরোসিন খাইয়ে নিজেও খায়। তার পরে ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু বিষয়টি জানতে পেরে বাড়ির লোকজন ও পড়শিরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে। তবে শিশু খুনের খবর পেয়ে এলাকার কিছু মানুষ ঝর্ণাকে মারধরের চেষ্টা করে। তখন পুলিশ এসে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে। তাঁকে প্রথমে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বছর দেড়েকের শিশুকে মৃত বলে জানিয়ে দেন বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। তিন বছর আগে ঝর্ণার প্রথম বিয়ে হয় শান্তিপুরে। বছর খানেক আগে তাঁর স্বামী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। এক বছরের ছেলেকে নিয়ে শান্তিপুরে মামাবাড়িতে থাকতেন ঝর্ণা। সম্প্রতি তাঁর দিদির এক দেওর তাঁকে ফোন করতে শুরু করে। ঝর্ণার দাবি, ফোনে আলাপ হওয়ার পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ওই যুবক তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রথম তিনি বিয়েতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু ওই যুবকের নাছোড়বান্দা মনোভাব ও ছেলের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলায় ঝর্ণা বিয়েতে রাজি হন।

মাস কয়েক আগে ঝর্ণা ছেলেকে নিয়ে বাসন্তীতে তাঁর দিদির বাড়িতে যান। কিন্তু ঝর্ণাকে মেনে নিতে রাজি হলেও তাঁর ছেলেকে মানতে রাজি হননি ওই যুবকের মা-বাবা। ফিরে আসেন ঝর্ণা। পরে ওই যুবক ফের বিয়ের কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়, ওই যুবক বিয়ে করে ঝর্ণার বাবার বাড়ি, হাঁসখালির গাজনাতেই থাকবেন। মাসখানেক আগে শান্তিপুরে এক কালীমন্দিরে তাঁদের বিয়েও হয়।

ঝর্ণার অভিযোগ, কিছু দিন পর থেকেই ওই যুবক ছেলের বিষয়ে আপত্তি তুলতে শুরু করেন। এমনকী ছেলেকে অন্য কোনও পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথাও বলেন। দির চারেক আগে ওই যুবক বাসন্তীর চুনোখালির বাড়িতে ফিরে যান। ঝর্ণার দাবি, ‘‘আমাকে ও বলে গিয়েছিল, বাড়িতে সবাইকে রাজি করিয়ে তবে আমাদের নিয়ে যাবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে ও জানিয়ে দেয়, ছেলেকে নিয়ে সে সংসার করতে পারবে না। আজও একই কথা বলে। তার পরেই সিদ্ধান্ত নিই ছেলেকে মেরে আমিও মরব।”

জেলা পুলিশের এক কর্তা এই দিন বলেন, ‘‘ধৃত ঝর্ণার দাবি কতটা সত্যি সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ওই তরুণীর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE