Advertisement
E-Paper

BSF: সীমান্তে সাক্ষাৎ মা-মেয়ের, পাশে বিএসএফ

মেয়েকে দেখে এ দিন শান্ত ছিলেন প্রৌঢ়া মা হাওয়া বিবি। কাঁপা-কাঁপা হাতে মেয়েকে জড়িয়ে ধরতে চান। আর মেয়ে আনন্দে-দুঃখে কেঁদে-হেসে অস্থির।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২২ ০৫:২৯

প্রতীকী ছবি।

বয়স হয়েছে। শরীর অশক্ত। অথচ, মেয়েকে শেষ বারের মতো দেখতে চেয়েছেন প্রৌঢ়া। কিন্তু কী করে তা সম্ভব, সেটাই বুঝতে পারছিল না প্রৌঢ়ার পরিবার। কারণ, মেয়ে যে থাকেন কাঁটাতারের ওপারে!

ভারতীয় মায়ের মেয়ের বিয়ে হয়েছে বাংলাদেশে। তা হলে কী ভাবে প্রৌঢ়ার শেষ ইচ্ছে পূরণ করা যায়? শেষ পর্যন্ত বিষয়টি জানানো হয় বিএসএফকে। সব শুনে এক মুহূর্ত দেরি না করে বিএসএফের তরফে বাংলাদেশের বিজিবি-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হল। দুই দেশের দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তৎপরতায় হয়তো বা শেষ বারের মতোই দেখা হল মা-মেয়ের। বেশ কিছু সময় দু’জনে নিজেদের মতো সময় কাটালেন। হেসে-কেঁদে একাকার মেয়ে। মায়ের থেকে বিদায় নিলেন চোখের জলে।

কৃষ্ণগঞ্জের বাংলাদেশ সংলগ্ন মার্টিয়ারির বাসিন্দা বৃদ্ধা হাওয়া বিবি দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ রয়েছেন। বর্তমানে শয্যাশায়ী। কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন গত কয়েক দিন ধরে। বুধবার রাতে তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা শুনে তাই চিন্তায় পড়েছিলেন ছেলে তোতো মণ্ডল। তাঁর দিদি মানিয়া বিবি মণ্ডল থাকেন কাঁটাতারের ওপারে, বাংলাদেশের চুয়াডাঙা জেলার মধ্যপখালি গ্রামে। সীমান্ত থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার ভিতরে।

এর পরেই বিষয়টি জানানো হয় বিএসএফের ৫৪ নম্বর বাহিনীর বর্ডার ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডারকে। বিএসএফের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি বাংলাদেশের বিজিবি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এই মর্মস্পর্শী ঘটনার কথা শুনে রাজি হয়ে যায় বিজিবিও। বিএসএফের উদ্যোগে ভ্যানে চাপিয়ে প্রৌঢ়া হাওয়া বিবিকে নিয়ে আসা হয় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে, জিরো লাইনে। অন্য দিকে, বিজিবি-র তৎপরতায় সীমান্তে আসেন মেয়ে মানিয়াও।

প্রথমে অসুস্থ মাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মানিয়া। কত দিন পর দেখা..! আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী থাকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী।

আগে সীমান্তে এত কড়াকড়ি ছিল না। ছিল না কাঁটাতার। সেই সময়েই বাংলাদেশের ভাল পাত্র দেখে মানিয়ার বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দিকে যদিও বা সীমান্তরক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে বাপের বাড়ি আসা যেত, কয়েক বছর আগে থেকে সেটা বন্ধ হয়ে যায় কড়াকড়ির কারণে। মাকে আর কোনও দিন দেখতে পাবেন বলে ভাবতেই পারেননি মানিয়া বিবি।

মেয়েকে দেখে এ দিন তুলনায় শান্ত ছিলেন প্রৌঢ়া মা হাওয়া বিবি। কাঁপা-কাঁপা হাতে মেয়েকে জড়িয়ে ধরতে চান। আর মেয়ে আনন্দে-দুঃখে কেঁদে-হেসে অস্থির।

মা-বোনের এই মিলন দৃশ্য দেখে ছেলে তোতো মণ্ডল বলছেন, ‘‘ভাবতে পারিনি, দিদিকে আবার দেখতে পাব। বিএসএফের উদ্যোগে সম্ভব হল। আমার মা বিএসএফকে প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করেছেন। মা এখন অনেকটাই খুশি।”

BSF daughter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy