Advertisement
E-Paper

রঘুনাথগঞ্জে কংগ্রেসের বৈঠক, টিপ্পনী মুকুলের

নেতারা একের পর এক দল বদলাচ্ছেন। এক দল ইতিমধ্যে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন, আর এক দল যে কোনও দিন পা বাড়াবেন বলে শোনা যাচ্ছে। বড়সড় ধাক্কা লেগেছে মুর্শিদাবাদে, নদিয়াও বাদ নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০১
রঘুনাথগঞ্জে রবীন্দ্রভবনে কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র

রঘুনাথগঞ্জে রবীন্দ্রভবনে কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র

নেতারা একের পর এক দল বদলাচ্ছেন। এক দল ইতিমধ্যে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন, আর এক দল যে কোনও দিন পা বাড়াবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

বড়সড় ধাক্কা লেগেছে মুর্শিদাবাদে, নদিয়াও বাদ নেই। কংগ্রেস বারবার দাবি করছে, প্রলোভনে পা দিয়ে কিছু নেতা বা জনপ্রতিনিধি চলে গিয়েছেন ঠিকই এবং তার জেরে জেলা পরিষদ থেকে পুরসভা, বহু বোর্ড হাতছা়ড়া হয়েছে। কিন্তু সাধারণ কর্মীরা এখনও কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়েছেন। নিচুতলার প্রতি নেতাদের ভরসা তথা আস্থার কথা ফের জানাতে এবং এখনও দল না ছাড়া নেতাদের আনুগত্য প্রমাণ করতে সোমবার রঘুনাথগঞ্জ রবীন্দ্রভবনে আট বিধায়ককে নিয়ে হাজির হলেন জেলা সভাপতি আবু তাহের খান। এবং ভরা সভায় তাঁরা হলফ করে বললেন, দল ছেড়ে যাচ্ছেন না। ঘটনাচক্রে, কংগ্রেসের সভা হল এমনই এক দিনে, যে দিন নদিয়ার মাজদিয়ায় দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় বললেন, দল বদলানো য়ে কারও ‘সাংবিধানিক অধিকার’। এর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই।

যাঁরা কংগ্রেস ছাড়তে পারেন বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, ফরাক্কার সেই মইনুল হক থেকে কান্দির অপূর্ব সরকার জঙ্গিপুরে বুথকর্মীদের সভায় হাজির ছিলেন। আট বিধায়ক ছাড়াও ছিলেন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ছিলেন না। আবু তাহের দাবি করেন, “নিচুতলার কর্মীদের যোগ্য মর্যাদা দেওয়া হবে। এখন থেকে দল চালাবেন বুথস্তরের কর্মীরা। তাঁরাই বাছাই করবেন কর্মকর্তা থেকে পঞ্চায়েত ও পুরসভার প্রার্থীদের। উপর থেকে কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হবে না।”

গত কিছু দিন ধরে যাঁর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে প্রচুর খবর রটেছে, সেই কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভি়ড সুর চড়িয়ে বলেন, “কর্মীদের বিভ্রান্তি কাটাতেই জঙ্গিপুরে এসেছি। কান্দিতে সন্ত্রাসের পরিবেশ চলছে। দু’শো কংগ্রেস কর্মী মিথ্যে মামলায় এলাকাছাড়া। তাঁদের আশ্রয় দিতে পারছি না। তা বলে আমার দল ছাড়ার প্রশ্ন নেই।” যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, সম্প্রতি কলকাতায় গিয়ে তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথাবার্তা বলে এসেছেন ডেভিড। তাঁর তৃণমূলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।

ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হকও তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জোর খবর। তিনি বলেন, “আমি কংগ্রেসের মাটির থেকে উঠেছি। চার বার জেল খেটেছি। ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আমার সংঘাত হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তাতে কী? কর্মীরা জেনে রাখুন, যত অত্যাচার হোক না কেন, মইনুল হক কংগ্রেসে আছে।”

প্রায় একই সুরে বিধায়ক আশিস মার্জিত বলেন, “রাস্তাঘাটে দেখা হলে একটাই প্রশ্ন, আপনি দলে আছেন তো?” বিধায়ক প্রতিমা রজক বলেন, “আমরা কর্মীদের সামনে প্রমাণ দিতে এসেছি, আমরা দলে আছি।” হুমায়ুন রেজার টিপ্পনী, “বেলডাঙার হাটে এক জন বিক্রি হয়েছে, উমরপুরের হাটে এক জন। কিন্তু হুমায়ুন রেজাকে কেনার মতো হাট তৈরি হয়নি।”

সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের মতে, “বারবার যে কর্মীদের সামনে হাজির হয়ে বিধায়কদের বলতে হচ্ছে ‘আমি দল ছেড়ে যাইনি’, এটা খুবই অপমানজনক।’’ মহম্মদ সোহরাবের দলত্যাগ ‘দুঃখজনক’ জানিয়ে তিনি বলেন, “এই ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত কী পাননি তিনি কংগ্রেস থেকে। এক দিন বুঝবেন, কত বড় ভুল করেছেন।” লোকসভায় দলত্যাগ রোখার আইন আনার জন্য দাবি তুলবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এক দল থেকে জিতে অন্য দলে যোগ দিলে পদত্যাগ করতে হবে, এমনটাই আইন করা উচিত।”

মুকুল অবশ্য বলেন, “দলবদল করা বেআইনি হত তা হলে সংবিধানে ‘দলত্যাগ’ শব্দটা থাকত না। ভারতীয় সংবিধানের ১০ নম্বর তফসিলে ‘দলত্যাগ’ শব্দটা দেওয়া হয়েছে।’’ অন্যায্য তো নয়ই, বরং এই দলবদল ‘গণতন্ত্রের পক্ষে শুভলক্ষণ’ বলেও তিনি দাবি করেছেন।

mukul roy congress tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy