মুকুটমণি অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
বর্ষশেষে ধানতলায় মতুয়া মহা সম্মেলনে যোগ দিলেন রাজ্যের অন্যতম শীর্ষ বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। অথচ মতুয়াদের সম্মেলন হলেও মঞ্চে দেখা গেল না রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়কস দলের অন্যতম মতুয়া মুখ মুকুটমণি অধিকারীকে। তিনি আবার নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপি প্রভাবিত মতুয়া মহা সঙ্ঘের সভাপতিও। স্বভাবতই তাঁর অনুপস্থিতি ঘিরে দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন যাবৎ দলীয় নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে মুকুটমণির মনোমালিন্য চলছে। কোর কমিটির বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় তাঁকে শো-কজ় করেও পিছিয়ে গিয়েছে দলের জেলা নেতৃত্ব। গত ২৩ ডিসেম্বর রানাঘাট ফ্রেন্ডস ক্লাবের মাঠে শুভেন্দুর জনসভাতেও মুকুটমণি দেরিতে এসেছিলেন। মঞ্চে শুভেন্দু যখন বক্তব্য রাখছেন, তার মধ্যেই মঞ্চ ছেড়ে নেমে যান রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক। দলের একটি সূত্রের দাবি, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতেই বিভিন্ন সভা ও অনুষ্ঠানে তিনি গরহাজির থাকছেন।
ধানতলার মতুয়া সম্মেলন প্রসঙ্গে রবিবার মুকুটমণি অবশ্য দাবি করেন, “বর্তমানে সব জায়গাতেই মতুয়াদের সম্মেলন হচ্ছে, ধানতলাতেও হয়েছে। আমায় আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কিন্তু অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি সেখানে যেতে পারিনি।” ফ্রেন্ডস ক্লাবের মাঠে শুভেন্দুর জনসভায় তিনি ‘সৌজন্য সাক্ষাত’-এর জন্যই গিয়েছিলেন বলে জানিয়ে তাঁর দাবি, “শুভেন্দুবাবুর জনসভা উপলক্ষে দলীয় ভাবে জেলা নেতৃত্ব আমায় কিছু জানাননি। তবে শুভেন্দুবাবু নিজে আমাকে ফোন করেছিলেন। তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করতেই ওই দিন আমি অল্প সময়ের জন্য মঞ্চে ছিলাম।”
দলের দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের প্রতি আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগই শুধু নয়। মুকুটমণির দাবি, “রানাঘাটের সভায় মতুয়াদের পক্ষ থেকে বিরোধী দলনেতার হাতে যে ভদ্রলোক পুস্তক তুলে দেন তিনি মোদী-বিরোধী, বিজেপি বিরোধী। তাঁকে তৃণমূলের মিটিং-মিছিলে দেখা যায়। মতুয়া ভাবাবেগে কেন আঘাত করা হল, তার উত্তর জেলা সভাপতি দিতে পারবেন।"
বিজেপির দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, “শুভেন্দু অধিকারীর সভা উপলক্ষে দলের সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যিনি মতুয়াদের পুস্তিকা শুভেন্দুবাবুর হাতে তুলে দেন, তিনি মতুয়াদেরই প্রতিনিধি।” তাঁর পরামর্শ, “দলের কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, তা তিনি দলের মধ্যেই বলতে পারেন।”
রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, “মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রতিনিধি না হয়েও কেউ যদি এমন পরিচয় দিয়ে থাকেন, তবে তা আদৌ ঠিক হয়নি। তবে বিজেপির দ্বিচারিতার রাজনীতি নতুন কিছু নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy